কাঁকসা: রবিবার মাঝ রাতে দুটি গাড়ির রেষারেষিতে মৃত্যু হয় চন্দননগরের যুবতী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের।
রবিবার মাঝ রাতে এই ঘটনার পর মৃত যুবতীর পরিবার ও তার গাড়িতে থাকা সঙ্গীরা অভিযোগ তোলে পানাগড়ের পাঁচ জন যুবক একটি গাড়িতে করে তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে কটুক্তি করতে থাকে, সেই কটুক্তি থেকে বাঁচতে গিয়ে ভুল পথে ঢুকে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় তাদের। পানাগড় বাজারের রাইসমিল রোডে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার।
এরপর সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি সুনীল কুমার চৌধুরী সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে ইভটিজিংয়ের মত কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি করেন। পুলিশ দাবি করে রাস্তায় দুটি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার পর শুরু হয় রেষারেষি। এরপরই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চন্দননগরের ওই যুবতী।

সুতন্দ্রার মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। স্থানীয় বাসিন্দারা থেকে শুরু করে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। দুর্ঘটনায় যুক্ত থাকা গাড়ির মালিক তথা পানাগড়ের বাসিন্দা বাবলু যাদবকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। ঘটনার ৭২ ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পর অবশেষে বাবলু যাদবকে গ্রেফতার করে কাঁকসা থানার পুলিশ ও আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের স্পেশাল টিম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে অন্ডাল থেকে গ্রেফতার করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি ইস্ট অভিষেক গুপ্তা, সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিভিন্ন সূত্র ধরে তারা বাবলু যাদবকে অন্ডাল থেকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার তাকে মহাকুমা আদালতে পেশ করার পাশাপাশি, তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে।
তিনি জানিয়েছেন প্রয়োজন পড়লে বাবলু যাদবকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হতে পারে।
অন্যদিকে, চন্দননগরের যুবতীর মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়।বৃহস্পতিবার কাঁকসা থানায় আসে ফরেনসিকের একটি দল। ছয় সদস্যের একটি দল এদিন কাঁকসা থানায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত যুবতীর গাড়ি ও বাবলু যাদবের সাদা গাড়িটির ছবি তুলে নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি তারা দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন এবং সেখান থেকেও বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন।
অন্যদিকে বাবলু যাদবের পক্ষের আইনজীবী সজল সাহা জানিয়েছেন, বাবলু যাদবের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ ওঠে সেগুলি মিথ্যা অভিযোগ ছিল। ইভটিজিং এর মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। রেষারেষির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। শুক্রবার বাবলু যাদবকে মহকুমা আদালতে পেশ করার সময় তারা জামিনের আবেদন জানাবেন।
তিনি জানিয়েছেন, বাবলু যাদবের বিরুদ্ধে ১০৫ ধারায় মামলা করা হয়েছে। যা অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা।তার সাথে ১২৫ (a) অর্থাৎ বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো মামলা দেওয়া হয়েছে। এর সাথে ২৮১ এবং ৩২৪ (৪) ধারা দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, রবিবার রাত্রে দুটি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। বাবলু যাদবের গাড়ি ওই যুবতীর গাড়িতে ধাক্কা মারার পর যুবতীর গাড়ির চালক বাবলু যাদবের গাড়ি ধাওয়া করতে গিয়ে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটায় এবং ওই যুবতীর মৃত্যু ঘটে।
অন্যদিকে, বিগত দিনে বাবলু যাদবের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছিল বেআইনি গাড়ি কেনাবেচার তা সবই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন বাবলুর আইনজীবী সজল সাহা।




Be First to Comment