অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: জামুরিয়া বিধানসভার চুরুলিয়ার লদা গ্রামের মানুষেরা শনিবার অজয় নদী থেকে বালি নিয়ে যাওয়া রাস্তা অবরোধ করে বালির ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেয়।
তারা অভিযোগ করে বলেন, বালি নিয়ে যাওয়ার বড় বড় ট্রাক চলাচলের কারণে বৃষ্টির পরে রাস্তায় কাদা জমে যায়। সেই রাস্তা দিয়ে এদিন প্রাইভেট টিউশনে যাওয়া এক পড়ুয়া অন্য পড়ুয়াদের সামনে রাস্তায় পড়ে যায়। ওই গ্রামের লোকজনেরা অভিযোগ করেন, সেখানে সেই সময় উপস্থিত জামুড়িয়া থানার চুরুলিয়া ক্যাম্পের একজন পুলিশ অফিসার ঘটনাটি জানতে পেরে পড়ুয়াদেরকে বলেছিলেন, তাদের টিউশনে যাওয়ার দরকার নেই। তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত। পরে ওই পড়ুয়ারা সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে একই কথা বলেছিল।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্র পালকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এটাই আজকের পশ্চিমবঙ্গের সত্য ছবি । আমি এই ঘটনার জানার পরেই চুরুলিয়া পুলিশ ক্যাম্পর ইনচার্জের সাথে ফোনে কথা বলি। তখন চুরুলিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আমাকে বলেন, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। এটি কেবল মাত্র পুলিশকে অপমান করার জন্য গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অগ্নিমিত্র পাল এই বিষয়টি নিয়ে অবাক হয়েছিলেন, একদিকে ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে সেখানে রাস্তায় রাস্তায় বালির ট্রাক সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তখন ছোট স্কুল পড়ুয়ারা ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিভাবে পুলিশকে বদনাম করার জন্য এই ধরনের কথা বলতে পারে?

রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এটাই শিখেছেন। কারণ পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণের ঘটনাটি যখন ঘটেছিল, তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন এটি একটি সাজানো ঘটনা। যা রাজ্য সরকারকে বদনাম করার জন্য সাজানো হয়েছ। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সেই শিক্ষা নিয়ে, এখন বাংলার সর্বত্র পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা একই সুরে কথা বলছেন।
বিজেপি বিধায়ক আরো বলেন, আমি ওই পুলিশ অফিসারকে এই বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি। এও বলেছি যদি কেউ পুলিশকে অপমান করার জন্য এমন গুজব ছড়িয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আর যদি কোনও পুলিশ অফিসার সত্যিই বাচ্চাদের টিউশন বা স্কুলে না যেতে বলে থাকেন, তাহলে সেই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এরপর অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, এটাই আজকের বাংলার সত্য। এখানকার যুবকদের কর্মসংস্থান নেই। হাজার হাজার স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিশুদের পড়াশোনার সুযোগ নেই। বাংলার মানুষদেরকে কেবল মাত্র লক্ষ্মী ভাণ্ডার এবং অন্যান্য ভাতা দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা চুপ থাকে এবং সরকারকে কোনও প্রশ্ন না করে। তিনি বলেন, আজ যদি পশ্চিমবঙ্গে কোন কর্মসংস্থান থাকে, তা হল মদ বিক্রি। এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, আজ বাংলার মেয়েদের বার বা পানশালায় চাকরি করতে যেতে হয়। কিন্তু তাদের এমন কোনও কর্মসংস্থান নেই, যাতে তারা সম্মানজনকভাবে তাদের পরিবারকে লালন-পালন করতে পারেন। শিক্ষিত যুবক যুবতীদের আজ চাকরির দাবিতে মাসের পর মাস ধরে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ করতে হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকার এই সব সম্পর্কে উদাসীন।
অগ্নিমিত্রা পাল এদিন বলেন, তিনি খুব শীঘ্রই চুরুলিয়ার ওই এলাকা পরিদর্শন করবেন। এর পাশাপাশি বালি, কয়লা, পাথর সহ অন্য সব ধরণের অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন ।




Be First to Comment