অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস: কালীপুজোর দিন কয়েক আগে থেকে রবিবার পর্যন্ত গত ১০ দিনে সবমিলিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ২০টিরও বেশি এটিএম জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল। এই সব ঘটনায় বিভিন্ন মানুষের অ্যাকাউন্ট থেকে এটিএমের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের রানিগঞ্জ থানার পুলিস গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এটিএম জালিয়াতি করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ” জামতাড়া গ্যাং”-এর দুই সদস্যকে গ্রেফতার করল। সম্পর্কে মামা ও ভাগ্নে এই দুজনকে রবিবার রানিগঞ্জে একটি এটিএম থেকে টাকা হাতানোর আগেই হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে ।
জানা গেছে, গত ২৫ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত আটদিনে একটি দল হিরাপুর থানা এলাকার ৪টি, আসানসোল দক্ষিণ থানা এলাকার ৪/৫টি ও আসানসোল উত্তর থানা এলাকার ৪/৫ টি সহ বিভিন্ম এলাকায় একাধিক এটিএমে অভিনব উপায়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটাচ্ছিল। আর এইসব ঘটনার খবর রানিগঞ্জ থানার পুলিশের কাছে আসে। সেই খবর পাওয়ার পরে রানিগঞ্জ থানার পুলিশ সতর্ক হয়ে যায়। সাইবার ক্রাইম আটকানোর বিশেষ টিম এটিএম থেকে টাকা হাতানোর দূষ্কৃতিদের ছবি হাতে পেয়ে যায়। রানিগঞ্জ থানার পুলিশ বিভিন্ন সোর্স মারফত জানতে পারে এইসব ঘটনার পেছনে আছে জামতাড়া গ্যাংয়ের দলের সদস্য বছর ১৮-র জুনেদ আলি ও বছর ২৮-এর আসানসোলের বোতল মসজিদ এলাকার বাসিন্দা আরমানুল হক। সম্পর্কে এরা মামা ও ভাগ্নে। দুজনে রানিগঞ্জে একটি অটো রিকশা করে এসেছে। তাদের এখানে এটিএম জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

কিন্তু তার আগেই রানিগঞ্জে আসানসোল পুরনিগমের বোরো অফিস থেকে স্টেশনের দিকে যাওয়ার সময় তারা পুলিশের নজরে পড়ে যায়। আগে থেকেই এই দুষ্কৃতিদের ছবি রানিগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ বিকাশ দত্তের কাছে এসে পৌঁছানোয় তিনি পুলিশকে সজাগ করে রেখেছিলেন। পুলিশ ওই ছবির সঙ্গে দুষ্কৃতীদের ছবি মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত হতেই তাদের পাকড়াও করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এরা এলাকায় এলাকায় এটিএম কাউন্টার গুলিতে নজরদারি চালাত। তারা দেখত, কারা এটিএম থেকে টাকা তোলার বিষয়ে একটু কম বোঝে। তাদের এটিএম কার্ড ও পাসওয়ার্ড সহ নানান তথ্য বিভিন্ন ছল চাতুরির মাধ্যমে জেনে নিয়ে হাতিয়ে নিতো লক্ষ লক্ষ টাকা। আর এই সমস্ত কাজটাই পরিচালিত করত জামতাড়া গ্যাংয়ের মাথারা।
রবিবার পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তখন তারা নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করে। সোমবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে হাজির করে রানিগঞ্জ থানার পুলিশ তাদেরকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে। বিচারক সেই আবেদনের ভিত্তিতে ধৃতদের জামিন নাকচ করে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এই প্রসঙ্গে পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, এখন ধৃতদেরকে জেরা করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, এদের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত আছে। আপাততঃ দুজনকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আসানসোলের একাধিক থানা এলাকায় এরা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাই ধাপে ধাপে ওই সব থানা এদেরকে সেখানে ঘটা ঘটনার তদন্তে হেফাজতে নেবে। তখন আরো অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।



Be First to Comment