উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি : প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়নে এগিয়ে এলেন বিধায়ক। সুন্দরবনের কুলতলির ঘটনা।
দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন ভূতুড়ে বাড়ি ঘাস, আগাছার জঙ্গলে ঢেকেছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। আর তাতে সাপ,কীটপতঙ্গের উপদ্রব প্রতিদিন বাড়ছিল।পরিষেবা নিতে আসা রোগীরা সর্বক্ষণ সাপের আতঙ্কে সিঁটিয়ে ছিল। চিকিৎসা পরিষেবা একেবারে তলানিতে পৌঁছেগেছিল। নিত্যদিন রোগী ও তাঁর পরিবারকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে জয়নগর কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছেছিল। এমনই চিত্র সুন্দরবনের কুলতলি ব্লকের মৈপীঠের ভুবনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন কারও নজর নেই এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে।আর এই সমস্যা সমাধানে অবশেষে এগিয়ে এলো কুলতলির বিধায়ক গণেশ্চন্দ্র মণ্ডল। তাঁর উদ্যোগে সংস্কার, পরিকাঠামো উন্নয়ন, আগাছা নিবারণের কাজ শুরু হল।

এই প্রসঙ্গে গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েতের প্রধান বাবলু প্রধান বলেন, সত্যি খুব খারাপ অবস্থা। আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সব জায়গায় জানিয়েছি। কিন্তু সেভাবে কোনও কাজ হয়নি। কুলতলির বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, এলাকার মানুষের সমস্যা মেটাতে তাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সব রকমের সুবিধা পাবে রোগী ও রোগীর পরিবার।এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েতের মানুষ নির্ভরশীল।
তবে বাম আমলে তৈরি এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির দশাও একেবারে শোচনীয়। ঘরের ছাদ থেকে জল পড়ে। দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০টি শয্যা আছে। তার অবস্থা ও খারাপ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢোকার মুখে রাস্তার দু’পাশ জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ঘাস, আগাছায় রাস্তাটুকু ঢেকে গিয়েছে। একজন ফার্মাসিস্ট, একজন নার্স ও একজন চিকিৎসক আছেন এখানে।এখানে আসা ভুক্তভোগী রোগীরা বলেন,খুব খারাপ অবস্থা কয়েক বছর ধরে চলছে। সাপের ভয়ে অনেকে এখানে আসতে পারেন না।আর এই বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব কয়েকগুন বেড়ে যায়। পঞ্চায়েত থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বর পরিষ্কারও করে দেওয়া হয় না।এখানে ঠিকমতো চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায় না, পাওয়া যায় না ওষুধও।
গ্রামের বাসিন্দারা এও বলেন, শুধুমাত্র রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি যে কোনও দিন ভেঙে পড়বে। সপ্তাহে সোমবার থেকে বুধবার একজন করে চিকিৎসকের থাকার কথা থাকলেও তিনি ঠিকমতো আসেন না। বাকি দিনগুলি পরিষেবা দেন ফার্মাসিস্ট ও নার্স। তারপরে নার্স না এলে ফার্মাসিস্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত থেকে চলে যান। রোগীর বাড়াবাড়ি হলে গাড়ি ভাড়া করে সাধারণ মানুষকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়।অবিলম্বে প্রশাসনের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে কুলতলির বিডিও সুচন্দন বৈদ্য বলেন, “ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছে। আশাকরি শ্রীঘ্রই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি থেকে উন্নত পরিষেবা পাবেন রোগীরা।”




Be First to Comment