উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,রায়দীঘি : নিজের রাজনৈতিক পরিচয়কে দূরে ঠেলে আবার দুর্যোগে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালেন রাজ্যের প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।তিনি ঝড়ের আগেই শুক্রবার রায়দীঘিতে গিয়ে পৌঁছান।তিনি দলাদলি ভুলে একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
এমনিতে সুন্দরবনের মানুষজন জানেন, ‘ঝড়ের আগে কান্তি আসে’। সাগর কাঁপিয়ে গেল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সুন্দরবনের মানুষদের সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে। রবিবার সকাল সকাল মণি নদী সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবারও ক্ষতিগ্রস্থ একাধিক এলাকায় গেলেন কান্তি তাঁর সাধ্যমত সাহায্য নিয়ে। তিনি দল-মত নির্বিশেষে এই সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন আবার। প্রবল বৃষ্টিতে চারিদিক সাদা। দোসর আবার ঝোড়ো হাওয়া। দূরপানে দৃষ্টি যাচ্ছে না খুব একটা।ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পড়েই সোমবার সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে এগিয়ে এলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।বাদাবনের মানুষগুলোর কাছে তিনি আজও পরম আত্মীয়।
লোকে বলে,’ঝড়ের আগে কান্তি আসে’। আয়লা হোক, বুলবুল হোক বা আমফান, প্রবীণ সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ছুটে গিয়েছেন সুন্দরবনে। করোনার সময়ও ভাইরাসের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ‘কান্তি বুড়োর বাহিনী’। বাম জমানাতে তিনি সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন।এরপর পালাবদল হয়েছে। বাংলার লাল দাপট ‘বেশ ফিকে’, দাবি রাজনৈতিক মহলের। কান্তি এখন আর বিধায়ক বা মন্ত্রী নন। কিন্তু, খুচখাচ সমস্যাতেও দৌড়ে যান সুন্দরবনে।

রবিবার রাতে সাগর দ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার কাছে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়। অঝোরে বৃষ্টি চলছে সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া সোমবার সকাল থেকেই।বাংলায় এখনও এক দফায় ভোট বাকি। কিন্তু,নির্বাচনী অঙ্ক না কষে সকলের একজোট হয়ে এখন সুন্দরবনের মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত, বার্তা কান্তির।সুন্দরবন বাসীর কাছে তাঁর আবেদন, ‘এই জলটা ধরে রাখুন যাতে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকে গেলে পানীয় জলের একটা সংকট তৈরি হতে পারে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।’তিনি সোমবার রায়দীঘির একাধিক এলাকায় যান। দূর্দশা গ্রস্থ মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।সাহায্য তুলে দেন।
সোমবার ঘূর্ণিঝড় “রেমাল”-এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেন মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বাপি হালদার ও রায়দীঘির বিধায়ক ডাঃ অলক জলদাতা।ওনারা এদিন এলাকার মানুষ যাহাতে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারে তাহার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করার জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন।
রায়দিঘির বিভিন্ন নদীমাতৃক এলাকা-সহ নালুয়া , লালপুর এলাকায় কৃষ্ণচন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার মাইতির সহযোগিতায় কিছু ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ও বিধায়ক। এ দিন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বাপি হালদার বলেন, “ভোটের আগে বলে নয়, সারাবছর মানুষের পাশে থাকি। আর সুন্দরবনবাসী হিসাবে ওদের পাশে এসে দাঁড়াতে এসেছি।এটা নিয়ে এই সময় কোনো রাজনীতি করতে চাই না।”




Be First to Comment