অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি জামুড়িয়া শিল্প তালুকে অজয় ও সিঙ্গারন নদী দখল নিয়ে আবারও সরব হলেন।
একইসঙ্গে তিনি রানিগঞ্জে মঙ্গলপুর শিল্প তালুকে সরকারি জমি দখল করার অভিযোগ তুললেন। সোমবার দুপুরে আসানসোলের ১৯ নং জাতীয় সড়কের শীতলা এলাকায় অবস্থিত ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই দুটি বিষয় নিয়ে জিতেন্দ্র তেওয়ারি রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন।
এই সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ গরাই সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, জামুরিয়ায় কিছু দিন ধরে অভিযোগ ছিল, সেখানে কিছু শিল্পপতি সিঙ্গারন ও অজয় নদী দখল করে কারখানার ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়েছে। গোটা বিষয়টি জামুড়িয়ার বিডিও জানানো হয়। একইভাবে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসককেও এই ব্যাপারে অবিহিত করছিলন । কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।

যখন এই নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়, তখন সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সময় জানা যায়, শুধু জামুড়িয়ায় নদী দখল নয় রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্প তালুক এলাকায় এমন ১১টি কারখানা রয়েছে যারা হাজার হাজার বর্গফুট জমি বেআইনিভাবে দখল করে নিয়েছে।
জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, এই ১১ টি কারখানার মধ্যে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আসানসোল পুরনিগম একটি কারখানার অবৈধ দখল ভেঙে ফেলার জন্য একটি আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, ২০২৪ সালের আগষ্ট মাস চলে এলেও, তা ভাঙা হয়নি। জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর প্রমাণ না করার জন্য বিজেপি এই সুযোগ দিচ্ছে।
যদি তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত আসানসোল পুরনিগম তার নিজস্ব আদেশ কার্যকর করে এবং এই ১১টি সংস্থার দ্বারা বেআইনিভাবে করা দখলগুলি ভেঙে দেয়, তাহলে বলা যায় তৃণমূল কংগ্রেস চোর নয়। কিন্তু যদি তা না করে তবে প্রমাণিত হবে, এই সংস্থাগুলির সাথে অবশ্যই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের আর্থিক লেনদেন আছে। যে কারণে, এখনও পর্যন্ত বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়নি।
জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, যখন কোনও গরিব মানুষ বা সাধারণ মানুষ একটি ছোট নির্মাণ করেন এবং ৫০ বা ১০০ বর্গফুট এলাকায় কোনও অবৈধ নির্মাণ করা হয়, তখন তা ভাঙ্গার জন্য বড় বুলডোজার আসানসোল পুরনিগমে থেকে পাঠানো হয়। পুরনিগমের বড় বড় ইঞ্জিনিয়াররা নিজেরাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু এখানে হাজার হাজার বর্গফুট জমিতে অবৈধভাবে শিল্পপতিরা নির্মাণ করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি হুঁশিয়ারী দেন, এইসব বেআইনি দখলদার উচ্ছেদে আসানসোল পুরনিগম কোনও পদক্ষেপ না করে, তবে বিজেপি আদালতের দরজায় কড়া নাড়বে। তারা অবৈধ নির্মাণগুলি ভেঙে দেওয়ার জন্য যা করার তা করবে।
জেলা বিজেপি সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, আসানসোল পুরনিগম তাদের জারি করা আদেশটি কার্যকর করা উচিত। তিনি স্পষ্ট করেন, ভারতীয় জনতা পার্টি শিল্পায়নের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি বরদাস্ত করবে না, যাদের টাকা আছে তারা টাকার ভিত্তিতে অবৈধ নির্মাণ করে চলে যাবে।
দখলদারি অপসারণের নামে গরিব মানুষের ছোট ঘর বা দোকান ভেঙে ফেলা হবে। পাশাপাশি তিনি আরও একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, তা জামুরিয়া হোক বা রাণীগঞ্জের শিল্প এলাকা মঙ্গলপুর, সেখানে স্থানীয় যুবকদের চাকরি দেওয়া হয় না, দক্ষ শ্রমিক হোক বা অদক্ষ শ্রমিক।
স্থানীয় যুবকদের কোথাও চাকরি দেওয়া হচ্ছে না, এসব কারখানায় যখনই কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখনই কারখানা কর্তৃপক্ষ জানে, তারা স্থানীয় যুবকদের চাকরি দিলে এ ধরনের কাজ করতে পারবে না। তিনি দাবি করেন, সমস্ত কারখানায় স্থানীয় যুবকদের ২০ শতাংশ কর্মসংস্থান প্রদান বাধ্যতামূলক করা উচিত।




Be First to Comment