Press "Enter" to skip to content

বাজারে দাদাগিরি! সবজি বিক্রেতাকে চড় মারার অভিযোগ জামুড়িয়ার তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে, প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ স্থানীয়দের

জামুড়িয়া : বাজারে “দাদাগিরি”। এক সবজি বিক্রেতাকে চড় মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়া ব্লকের (২) সভাপতি সিদ্ধার্থ রানার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামুড়িয়া এলাকা তোলপাড়। জানা গেছে, অভিযুক্ত এই তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা একইসঙ্গে জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির পদে আছেন। স্বাভাবিক ভাবেই দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ উঠায় চরম অস্বস্তিতে পশ্চিম বর্ধমান জেলা শাসক দলের নেতৃত্ব।

তাঁরা গোটা বিষয়টিতে নজরে রেখে, দলীয় স্তরে খোঁজখবর করছেন। কিন্তু ব্লক সভাপতি তার বিরুদ্ধে উঠা সবজি বিক্রেতা চড় মারার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেন।

অন্যদিকে, শাসক দলের ব্লক সভাপতির দাদাগিরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আক্রমন করে পথে নেমে পড়েছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।

এদিকে, এই ঘটনায় একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যায়, ব্লক সভাপতির সঙ্গে সবজি বিক্রেতা রঞ্জিৎ বার্নোয়ালের কথা কাটাকাটি হচ্ছে। সেই সময় ব্লক সভাপতি ওই সবজি বিক্রেতার দিকে হাত উঁচিয়ে তেড়ে যাচ্ছেন এবং তার গালে চড় মারছেন।

এই ঘটনার পরে সবজি বাজারে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিরুদ্ধে সবজি বিক্রেতাকে মারধরের প্রতিবাদে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন জামুড়িয়া ২ নম্বর ব্লকের খাস কেন্দা সবজি মার্কেটের বেশ কিছু সবজি ব্যবসায়ী এবং অন্য দোকানদাররা। তারা সকাল ১০ টা থেকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে বসে পড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন।

এই ঘটনায় গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকায় আসে জামুড়িয়া থানার পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জামুরিয়া ব্লক ২ এর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সিদ্ধার্থ রানা অন্যায় ভাবে এলাকার হাটে বাজারে থাকা সবজি বিক্রেতাদের হুমকি দিয়ে চমকিয়ে ভয় দেখান। শুধু তাই নয়, তাঁর কথার একটু নড়চড় হলেই তাদের ওপর চড়াও হয় বলেও, দাবি বিক্ষোভকারীদের ।

এদিন খাসকেন্দার এক সবজি বিক্রেতা রঞ্জিত বার্নোয়ালের অভিযোগ, বাজারে সবজি বিক্রি করছিলাম। সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি জিজ্ঞাসা করায়, সবজির দাম নিয়ে কথা বলি। আচমকাই ব্লক সভাপতি তাকে মারধর করে বলে দাবি ওই সবজি বিক্রেতার। জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্য এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বাজারের দোকানদারেরা ৬০ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। এলাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের দল এলাকায় পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্ত বিষয়ের সমাধান সূত্র বার করা হবে বলে আশ্বাস দেয়। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

যদিও যার বিরুদ্ধে এই মারধরের অভিযোগ সেই সিদ্ধার্থ রানা অবশ্য দাবি করেন, এলাকায় যানজট হচ্ছে। চিঁচুড়িয়া মোড়ের খাস কেন্দা এলাকার বাজারে ব্যবসায়ীদের রাস্তা ছেড়ে সবজি বিক্রি করতে বলা হয়েছে। কারণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, কোথাও কোনও কিছু দখল করা যাবেনা। কাউকে তিনি মারধর করেননি বলেই দাবি তার।

এই প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, কিছু একটা ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। দলের তরফে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।

এ দিকে, বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, এটা নতুন কিছু নয়। গোটা বাংলা জুড়ে তৃনমুল কংগ্রেসের ছোট বড় সব নেতারা এইভাবে দাদাগিরি করছে। থানায় গেলে অভিযোগ নেওয়া হয়না। তাদের সময় শেষ হয়ে এসেছে। ২০২৬ সালে বাংলার মানুষেরা তাদেরকে উৎখাত করবেন বলে মনঃস্থির করে ফেলেছেন বলে দাবি বিজেপির জেলা সভাপতির।

তবে, সিদ্ধার্থ রানার এইভাবে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া, নতুন কিছু নয়। এর আগে তিনি নানা ধরনের ঘটনায় জড়িছেন।

জামুড়িয়া থানার পুলিশ জানায়, কোনও একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটা সমস্যা হয়েছিল। কথা বলে তা মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *