হিরাপুর ও আসানসোল : আসানসোল শিল্পাঞ্চলে আবারও সাইবার অপরাধ চক্র’র হদিশ পাওয়া গেলো। এবার এই চক্রের খোঁজ পাওয়া গেলো আসানসোলের হিরাপুর থানার ইসমাইলের ষষ্ঠীনগরে। আর এই চক্রের সঙ্গে “জামতাড়া গ্যাং”-এর যোগ পাওয়া গেছে। ইসমাইলের ষষ্ঠীনগরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখান থেকে এই চক্র সাইবার অপরাধ সংঘটিত করে আসছিল, সাধারণ মানুষদেরকে প্রতারিত করত বলে হিরাপুর থানার পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পরে জানতে পেরেছে।
মঙ্গলবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হিরাপুর থানার টাউন অফিসার রাজেশ ভট্টাচার্য একটি দল ইসমাইলের ষষ্ঠীনগরে ওই বাড়িতে হানা দিয়ে হাতেনাতে ধরে ফেলে চক্রের তিনজনকে। ধৃতরা হল আসানসোলের জামুড়িয়া থানার ডোবরানা গ্রামের বিনোদ পাত্র, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলার নারায়নপুর থানার পাত্রডিহি গ্রামের প্রদুম যাদব ও সন্তোষ যাদব।
ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ ৮ টি মোবাইল ফোন, লক্ষাধিক টাকা, ৮ টি ডেবিট কার্ড, ২টি ক্রেডিট কার্ড এবং একটি মোটরবাইক পুলিশ উদ্ধার করেছে।

ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৯, ৪১৯, ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৭, ৪৬৮, ১২০/বি ও ৩৪ নং ধারায় মামলা করা হয়েছে। বুধবার ধৃতদেরকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে হিরাপুর থানার তরফে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইসমাইলের ষষ্ঠীনগরে এই তিনজন বাড়ি ভাড়া নাম নিয়ে থাকছিল । বাড়ির মালিক বয়স্ক দূর্গাপুরে থাকেন। দিন তিনেক আগে এই বাড়ি নেওয়া হয়েছিল । ওই বাড়িতে থাকা এই তিনজনের গতিবিধি সন্দেহজনক বলে হিরাপুর থানার পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে ।
সেই খবর মতো মঙ্গলবার টাউন অফিসার দলবল নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান। তারপর হিরাপুর থানার ওসি সৌমেন্দ্রনাথ সিংহ ঠাকুরের নির্দেশ মতো অভিযান চালানো হয়। পুলিশ জানতে পেরেছে, এই চক্র ফোন করে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট, এটিএম কার্ড ও গ্যাসের কানেকশনের জন্য কেওয়াইসির কথা বলতো। তারপর ওটিপি চেয়ে নানা ধরনের কথার জালে জড়িয়ে বোকা বানিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা হাতিয়ে নিত।
মঙ্গলবার হিরাপুর থানার পুলিশ যখন ইসমাইলের বাড়িতে হানা দেয়, তখন এই চক্রের সদস্যরা এক ব্যক্তিকে ফোন করে ওটিপি চাইছিল । পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, তদন্তে করে দেখা গেছে বাড়ির মালিকের সঙ্গে এই চক্রের কোনো যোগ নেই। তিনি এই তিনজনের কাজের ব্যাপারে তেমন কিছু জানতেন না। ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, তারা কতদিন এই কাজ করছে ও এখনো পর্যন্ত কতজন তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

তবে, আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সাইবার অপরাধের সঙ্গে “জামতাড়া গ্যাং”- এর যোগ নতুন নয়। এখনো পর্যন্ত যত ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে সরাসরি জামতাড়ার সাইবার অপরাধীদের লিঙ্ক পুলিশ পেয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে অনেকে। কিন্তু তারপরও পুলিশ এই অপরাধ আটকাতে পারছেনা। কিছুদিন চুপ থাকার পরে নতুন করে অপরাধীরা প্রতারণার ফাঁদ পাতছে।



Be First to Comment