অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: গত রবিবার ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকা। সপ্তাহখানেক বাদে প্রায় স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। আবারও ছন্দে ফিরছেন তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। সেই আগেরই ছবি ধরা পড়ছে শহরের সেনপাড়া, উত্তর রায়কতপাড়ায়।
গত রবিবার বিকেলের ক্ষণিকের ঝড় বদলে দিয়েছিল শহরের একাংশ ও তিস্তাপাড়ের জীবনযাত্রা। কয়েক মিনিটের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে শহরের সেনপাড়া,উত্তর রায়কত পাড়া,রায়কত পাড়া ও হাকিম পাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়।বিপর্যয় নেমে আসে তিস্তাপাড়ের দক্ষিণ সুকান্ত নগর এলাকায়। ওই এলাকায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন শতাধিক মানুষ। ক্ষতি হয় গবাদী পশুরও। শহরে বৈদ্যুতিক তারে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। জল সংকটের মুখে পড়েন কয়েক হাজার মানুষ।
এ দিকে বেশ কিছু জায়গায় রাস্তায় গাছ পড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়। কেবল ও নেটের লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় প্রথম দু’দিন টিভি দেখতে বা নেট সার্ফিং করতে পারেননি অনেকেই। ঐতিহ্যবাহী জিলা স্কুলও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এখন ধীরে ধীরে সবকিছুই স্বাভাবিক হওয়ায় হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো মেরামতির কাজ শুরু করেছেন মালিকরা।পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল স্বরূপ মণ্ডল বলেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলায় দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন গৃহবধূ অঞ্জলি শর্মা সহ স্থানীয়রা। কেবল অপারেটর বাসুদেব বসু বলেন, “গ্রাহকদের কথা ভেবে দিন রাত এক করে কাজ করে কেবল ও নেট পরিষেবা স্বাভাবিক করা হয়েছে।” শহরের এক, দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা।

এ দিকে তিস্তাপাড়ে নতুন করে সংসার পাততে ব্যস্ত এলাকাবাসীরা। অনেকের ঘরের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। ত্রিপল দিয়ে ঘরের ওপর আচ্ছাদন দিয়েছেন তাঁরা। ভাঙা ঘরেই নতুন করে সংসার গুছিয়ে নিতে দেখা গেল এলাকার মহিলাদের। নিজেদের খাবার জুটলেও পোষ্যদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিস্তাচরের একাংশ মানুষ। ঝড়ে বাসনপত্রও কোথায় গিয়ে পড়েছে তার হদিশ পাচ্ছেন না দক্ষিণ সুকান্তনগরের অনেকেই।
সরকারি বেসরকারি ত্রাণ পেলেও এখন ভয় বৃষ্টির। স্থানীয় সুমিতা সেন বলেন, “প্রশাসনের দেওয়া ত্রিপল দিয়ে ঘরের ওপরের আচ্ছাদন করেছি। বৃষ্টি হলে সমস্যায় পড়ব। আশা করব প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।” কাঞ্চন সাহা বলেন, “প্রশাসনের তরফে দেওয়া বাসনপত্রেই রান্না হচ্ছে।গৃহস্থালির সামগ্রী উড়ে গিয়ে কোথায় পড়েছে তা জানিনা। সব নতুন ভাবে আবার শুরু করতে হচ্ছে।”




Be First to Comment