অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: দিনভর চড়া রোদ, অসহ্য দাবদাহ। বিকাল-সন্ধ্যায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার মাঝেই শহরে জমজমাট রাজবাড়ির মনসা পুজো ও মেলা। পাঁচ শতাধিক বছরের প্রাচীন বৈকুন্ঠপুর রাজ এস্টেটের এই মেলা ঘিরে আলাদা আবেগ জেলা জুড়েই। ভিন্ জেলা, এমনকি অসম থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন মেলায়।
পুজোর তিনদিন পালা করে মায়ের জন্য রান্না হল পোলাও, ফ্রায়েড রাইস, ভাত, খিচুড়ি। সঙ্গে ছিল তরকারি, চাটনি, পাঁচ রকমের ভাজা, দই, মিষ্টিও। করলা নদী থেকে আনা টাটকা বোয়ালের পদ মায়ের প্রিয়। এ ছাড়া, ইলিশ, কাতল, চিংড়ি -সহ চার রকমের মাছের পদও ছিল পুজোর তিনদিন মণ্ডপে উত্তরের ঐতিহ্যবাহী বিষহরি গান শুনলেন মা মনসা।
পুজো সোমবার শেষ হলেও, মেলা চলবে ২২ আগস্ট পর্যন্ত। হারিয়ে যেতে বসা টমটম গাড়ি-সহ কাঠের তৈরি খেলনার আজও দেখা মেলে এখানেই। রাজবাড়ির মেলায় এসে জিলিপি না নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন এমন মানুষ পাওয়া ভার। বৈকুন্ঠপুর রাজ এস্টেট নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা। তিনি বলেন, বিষহরির পুজো রাজবংশী সমাজে সুদীর্ঘকাল আগে থেকেই ছিল। ১৫০৯ খ্রিস্টাব্দে বিশ্ব সিংহ ও শিষ্য সিংহ, দুই ভাই মিলে এই পুজোর প্রচলন করেন রাজবাড়িতে।” তবে, কয়েকবার রাজধানী স্থানান্তর হয় বলেও জানিয়েছেন উমেশ শর্মা।


উত্তরের সংস্কৃতির অঙ্গ বিষহরি গান আজ লুপ্তপ্রায়। রাজবাড়ির মনসা পুজোয় আজও সেই গানকে ধরে রাখার চেষ্টা করা হয় বলে জানিয়েছেন শিল্পীরা। মেলায় পসরা নিয়ে বসা জনাকয়েক ব্যবসায়ী বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরেই এই মেলায় ব্যবসা করছি। কোনওবার লোকসান হয়নি মা মনসার কৃপায়।”




Be First to Comment