উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : দেশের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের তিনমাসের জার্নি শেষ হল মঙ্গলবার ফল ঘোষণার মধ্যে দিয়ে।এবারে ১৯ নম্বর জয়নগর লোকসভা আসনে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৈরি হওয়া আইএসএফের বিশাল সাফল্য এল।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড় থেকে জয়লাভ করে বিধায়ক হন নওশাদ সিদ্দিকি। আর এই আইএসএফ এবারের লোকসভা নির্বাচনে বামজোটের সঙ্গে জোট করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত একাই লড়ার পথে হাঁটে তারা। সেই মতো জয়নগর, মথুরাপুর,যাদবপুর ও ডায়মন্ডহারবার-সহ রাজ্যের একাধিক আসনে প্রার্থী দেয় আইএসএফ।আর ফলাফল ঘোষণার পরে দেখা গেল জয়নগর ও মথুরাপুর কেন্দ্রে বামেদের পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে চলে আসে আইএসএফ।যাদবপুর ও ডায়মন্ড হারবারে অবশ্য বামেরা তাদের তৃতীয় স্থান বজায় রাখতে পেরেছে।এই দুটি আসনে আইএসএফ চতুর্থ স্থানে গেছে।
নওশাদ সিদ্দিকির আই এস এফ মূলত সংখ্যালঘু ভোট ব্যংককে নজর দিয়ে ছিল।তবে জয়নগর ও মথুরাপুর কেন্দ্র দুটি তপশিলি হওয়ায় তাদের দুজন প্রার্থীই হিন্দু ধর্মের ছিলো।জয়নগর কেন্দ্রে এবারে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল চার লক্ষ ৭০ হাজার ২১৯ ভোটের ব্যবধানে বিজেপির ডা. অশোক কান্ডারীকে পরাজিত করে।আর এই কেন্দ্রে বামেদের পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে চলে আসে আই এস এফ প্রার্থী মেঘনাদ হালদার। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬৫ হাজার ৩৭২ টি ভোট,যেখানে চতুর্থ স্থানে থাকা বাম প্রার্থী আর এসপির সমরেন্দ্র নাথ মন্ডলের প্রাপ্ত ভোট ৪০ হাজার ১১৩ টি ভোট।এই লোকসভা আসনে আই এস এফ সবথেকে বেশি ভোট পায় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ক্যানিং পূর্ব বিধানসভায়।এখানে তাঁদের প্রাপ্ত ভোট ১৭ হাজার ৫১৬ টি ভোট, ক্যানিং পশ্চিমে ১৪ হাজার ৮৫৯ টি ভোট, মগরাহাট পূর্বতে ১২ হাজার ২৪৫ টি ভোট, জয়নগরে ৪হাজার ৪৩৬ টি ভোট পায় আই এস এফ।

অন্যদিকে ২০ নম্বর মথুরাপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বাপি হালদার ২ লক্ষ ১০ হাজার ৫৭ ভোটে বিজেপি অশোক পুরকাইত কে পরাজিত করে জয়লাভ করে।এই কেন্দ্রে বামপ্রার্থীকে পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে চলে আসে আই এস এফ। এখানে আই এস এফ প্রার্থী অজয় কুমার দাসের প্রাপ্ত ভোট ৮৭ হাজার ৬০৬ টি। সেখানে চতুর্থ স্থানে গিয়ে সিপিএমের শরৎ চন্দ্র হালদারের প্রাপ্ত ভোট ৬১ হাজার ১০০ টি ভোট।এই কেন্দ্রের কুলপি বিধানসভা থেকে আই এস এফ পায় ২৪ হাজার ৭২৯ টি ভোট, মগরাহাট পশ্চিম থেকে ১৭ হাজার ৪৫৭ টি ভোট,মন্দিরবাজার থেকে ১৫ হাজার ৫৪৯ টি ভোট, রায়দীঘি থেকে ১৩ হাজার ৪৪০ টি ভোট।
তাহলে কি বামেদের জায়গাটা দখল করে নিল আই এস এফ। আই এস এফের এতো ভোট বৃদ্ধি হলো কি করে তা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। মূলত সংখ্যালঘু ভোট ব্যংককে থাবা বসানোর পাশাপাশি হিন্দু ভোট ও কিছু তাদের ঝুলিতে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তাঁরা কিন্তু তৃনমুল কংগ্রেসের সংখ্যা লঘু ভোট ব্যংককে সেভাবে থাবা বসাতে পারে নি।তৃনমুলের ভোট বেড়ে গেছে এই দুই কেন্দ্রে।
তবে দুই বছর পর বিধানসভার নির্বাচন। তার আগে এই সাফল্য বাড়তি অক্সিজেন জোগান দিল আইএসএফ-কে জয়নগর ও মথুরাপুরে। যা কিনা শাসক দলের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।



Be First to Comment