Press "Enter" to skip to content

চিত্তরঞ্জনে রেলের বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে দেওয়া হল মার্কেটের অবৈধ ১৪৫টি দোকান

চিত্তরঞ্জন : শেষ পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলার রেল শহর চিত্তরঞ্জনের সবচেয়ে বড় ও প্রধান বাজার আমলাদহি মার্কেটে বেআইনি দোকান ভাঙতে বুলডোজার চালাল রেল।

এই মার্কেটেের ১৪৫ টি দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল রেল। এই অভিযানের একেবারে শুরুতেই রেলের তরফে বাস দাঁড় করিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর দোকান ভাঙতে চলে একের পর এক বুলডোজার। রেলের এই অভিযানের ফলে কিছু মানুষের চোখের জল যেমন পড়ল, তার সঙ্গে তাদের আর্তনাদের সাক্ষী থাকল চিত্তরঞ্জন।

এদিনের এই উচ্ছেদ পর্ব চালানোর জন্য প্রায় যুদ্ধকালীন এবং আঁটোসাটো ব্যবস্থা রেখেছিল রেল। উচ্ছেদ পর্ব সামাল দিতে এলাকায় ছিলেন আরপিএফের ৯ জন ইন্সপেক্টর, ৪০ জন কর্মী, ২ জন মহিলা ইন্সপেক্টর, ৭ জন মহিলা আরপিএফ, ২৪ জন রেলের আইওডব্লু দপ্তরের অফিসার ও কর্মীরা ।

রেলের তরফে আনা চারটি বুলডোজার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় ৩০/৪০ বছর ধরে এই আমলাদহি মার্কেটে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া দোকানগুলি। অন্যদিনের মতো কোনও কোনও দোকানদার বা ব্যবসায়ী সকালে উনুন ধরিয়ে চা, রুটি, কচুরি তৈরি করছিলেন। কেউ আবার সামান্য শীতের জিনিস নিয়ে বসেছিলেন দোকানে। তবে, এদিন কোনও প্রতিরোধ ছাড়াই সেই সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল রেলের বুলডোজার।

এই বাজারে মোট ২৩৬ টি অস্থায়ী দোকান আছে বলে জানান, আন্দোলনকারী দোকানদারদের পক্ষে বিল্টু ঠাকুর। এদিন তার দোকানও ভাঙ্গা হয় বলে জানিয়েছেন । এদিন ভাঙ্গা হয় তার মতো অনেক ব্যবসায়ীর দোকান, যারা গত ৩/৪ দশক ধরে কেউ কাপড়, রেডিমেড, খাবার বা অন্য কিছুর ব্যবসা করছিলেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে একাধিকবার সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস সহ প্রধান রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি, তাদের শ্রমিক সংগঠনগুলি আমলাদহি মার্কেটের দোকান উচ্ছেদ না করার জন্য রেলকে অনুরোধ করেছিল। ‌তাতে সাময়িক প্রতিশ্রুতিও মিলেছিল। কিন্তু দুর্গাপুজো, কালিপুজো ও ছট পুজো শেষ হওয়ার পরেই শীতের মুখে রেল এদিন অনুমতিহীন এইসব বেআইনি দোকান ভেঙ্গে দিল। ‌কাজে এলো না বারাবনির বিধায়ক তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়, সিটু নেতা প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী, কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার এবং আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের অনুরোধ।

বাকি যে দোকানগুলি এখনো রইল সেগুলিও শীঘ্রই ভেঙে দেওয়া হবে বলে রেলের তরফে বলে দেওয়া হয়েছে।
এর আগেই সিমজুড়ি ও ফতেপুর এলাকাতেও একইভাবে অবৈধ দোকানগুলি উচ্ছেদ করে রেল ।

এদিন আমলাদহি মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযানে থাকা আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিউরিটি কমিশনার সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, আগে দু’বার উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছিল। এদিন সব পক্ষের সম্মতিতে বিনা বাধায় ও নির্বিঘ্নে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশকে আগেই জানানো
হয়েছিল।

রেলের এই সিদ্ধান্তে এবং পদক্ষেপে ব্যবসা হারিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসলেন এইসব দোকানের মালিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। কারণ এতো বছর ধরে এই দোকানের আয় থেকেই তাদের সংসার চলত। তাই এত বছর পরে চোখের নিমেষে সবকিছু হারিয়ে এখন কি করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না কোনও দোকানদার।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *