প্রবোধ দাস, রঘুনাথপুর: ‘হাউস ফর অল প্রকল্প’ – এ মেলেনি সম্পূর্ণ টাকা। ফলে উপভোক্তাদের ত্রিপল টাঙিয়ে, ভাড়াবাড়িতে কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে। গত দু’দিনের বৃষ্টিতে তাঁদের ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে। তাই আবাস যোজনা প্রকল্পের সম্পূর্ণ টাকা চেয়ে শনিবার উপভোক্তারা রঘুনাথপুর পুরসভার চেয়ারম্যানকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান।
প্রায় ১০০ উপভোক্তা এ দিন বিক্ষোভে শামিল হন। পরে চেয়ারম্যানের তরফ থেকে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ উঠে যায়। অবিলম্বে টাকা না পেলে উপভোক্তাদের তরফ থেকে বৃহত্তর আন্দোলন নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে রঘুনাথপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তরণী বাউরি বলেন, হাউস ফর অল প্রকল্পে টাকার জন্য রাজ্যের সুডা দফতরকে জানানো হয়েছে। টাকা এলে দ্রুত উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে।

রঘুনাথপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে রঘুনাথপুর পুরসভায় হাউস ফর অল প্রকল্পের সূচনা হয়। ওই অর্থবর্ষে ৪৮৬ জনের বাড়ি অনুমোদন করা হয়। যার মধ্যে প্রায় ৪১৮ জনের বাড়ির কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। কয়েক জনের কিছু টাকা বাকি রয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মোট ৪০০ জনের বাড়ি অনুমোদন করা হয়। সকলের বাড়ি প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে। শেষ কিস্তির কিছু টাকা বাকি রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের উপভোক্তারা বিপাকে পড়েছেন। ওই অর্থবর্ষে কোনও উপভোক্তা সম্পূর্ণ টাকা পাননি। ফলে কারও বাড়িই সম্পূর্ণ হয়নি।
কয়েক বছর হয়ে গেলেও টাকা না পাওয়ায় উপভোক্তারা কেউ ত্রিপল টাঙিয়ে, কেউ ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাউস ফর অল প্রকল্পে মোট ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রাজ্য সরকার ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া উপভোক্তার যখন বাড়ি অনুমোদন হয়, তখন তাঁকে ২৫ হাজার টাকা পুরসভায় জমা করতে হয়। পরবর্তী সময়ে সেই টাকা বাড়ি তৈরির জন্য ফেরত দেওয়া হয়। বাড়ি তৈরির জন্য যাঁর নাম অনুমোদন হয়, তাঁর নিজস্ব জমি থাকতে হয়।
অভিযোগকারী শিবরাম দাস, নমিতা বাউরি বলেন, বাড়ির সম্পূর্ণ টাকা পাননি। ফলে প্রচুর কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই ঘর ভেঙে বিপাকে পড়েছেন। এই যাঁদের একটি মাত্র ঘর ছিল, সেটি ভেঙে ফেলায় ভাড়া বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। ভাড়া জান বাড়িতে ভাড়া দিতেই টাকা চলে যাচ্ছে।
রঘুনাথপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি এই তারকনাথ পরামাণিক বলেন, “সাধারণ মানুষের কষ্ট দেখে আমরা পুরসভাকে ডেপুটেশন দিয়েছি। অবিলম্বে মানুষের অসুবিধা দূর না হলে আমরা দলীয় ভাবে আন্দোলনে চালিয়ে যাব”।




Be First to Comment