Press "Enter" to skip to content

সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় ফুটি চাষে এ বারে এগিয়ে এসেছেন কৃষকরা

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সুন্দরবন : বেশ কয়েকবছর পর সুন্দরবনের বিভিন্ন জমিতে চাষ হতে দেখা গেল ফুটি নামে একটি ফলের।এখন সেভাবে দেখা যায় না এই ধরনের ফলের। তবে আগেকার দিনের মানুষদের কাছে এই ফল ছিল খুব পছন্দের। যার নাম হল ফুটি। এটা সাধারণ জমিতেই চাষ হয়।

ফুটি সাধারণত বেশ বড় আকারের হয়। এটি কাঁচা ফল অবস্থায় রং থাকে সবুজ, পেকে গেলে হলুদ রঙের হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফল ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলের বাইরের দিকটা দেখতে অনেকটাই কুমড়োর মত হালকা ডোরাকাটা। খেতে তেমন মিষ্টি নয় তবে এই ধরনের ফল বেশ কয়েক বছর আগে মানুষরা গুড়, চিনি বা বাতাসা দিয়ে খেত।

এই ফলে তেমন লাভ না থাকায় এই চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো সুন্দরবনের চাষিরা।তবে বর্তমানে বেশ কিছু কৃষক এগিয়ে এসেছে এই চাষে।আর তাই তো সুন্দরবনের জয়নগর, কুলতলি, রায়দীঘি,পাথরপ্রতিমা,সাগর, নামখানা, মথুরাপুর সহ একাধিক এলাকায় এবার এই ধরনের ফলের চাষ হতে দেখা যাচ্ছে।

এই চাষে কোনো ঝুঁকি নেই। রোগ পোকার আক্রমণ সেভাবে নেই। তাই এই বিকল্প চাষে কৃষকরা ভালো মুনাফা ও করছে।চিকিৎসক দের মতে, এই ফলে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে। কারণ এই ফল কাঁচা অবস্থায় রান্না করে খাওয়া যায় তাঁর পাশাপাশি এই ফলে হজম শক্তির বৃদ্ধির পাশাপাশি মিষ্টির পরিমাণ কম থাকায় ডাইবেটিস রোগীরাও এই সুস্বাদু ফল খেতে পারে। এই ফল নিয়মিত খেলে সুগার রোগীদের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকবে।

কুলতলির কয়েকজন কৃষক বলেন, আগে আমরা ছোটবেলায় এই ফলের চাষ দেখতাম। কিন্তু তখন সেভাবে লাভ না হওয়ায় এই চাষ থেকে সরে এসে অন্য বিকল্প চাষ করতো আমাদের বাবা কাকারা।যাতে মুনাফা ভালো ছিলো। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখছি এই চাষে কোনো ঝুঁকি নেই।কোনো রোগ পোকার ঝামেলা নেই। তাঁর ওপর ভালো মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে।তাই আমরা এই চাষে এগিয়ে এসেছি।

সুন্দরবনের এক কৃষি বিশেষজ্ঞ বলেন,এই ফল সাধারণত শুষ্ক ও উষ্ণ জলবায়ুর সবচেয়ে উপযোগী। উর্বর দোআঁশ ও পলি মাটি এই চাষের পক্ষে খুব উপযোগী। এই ফল জমিতে চাষ করতে গেলে জমিকে প্রথমে ভালো করে কর্ষণ করে নিতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বীজ রোপণ করতে হবে। প্রত্যেকটি বীজ লম্বায় পাঁচ থেকে ছয় ফুট ও দু ফুট চওড়ায় সারি বদ্ধ ভাবে বুনতে হবে।এই চাষে খুব একটা সারের প্রয়োজন নেই। তবে ভালো ফল ও গাছের পোকা রোধ করার জন্য রাসায়নিক সারের প্রয়োগ করা যেতে পারে।এই ফল জন্মানোর পর যাতে ফল পচে না যায় তাঁর জন্য জমিতে ফলের নিচে খড় বিছিয়ে দেওয়াটা বাধ্যতামূলক।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফল এক কেজি, দু কেজি থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই ফল অনেক সময় ফেটে যায় সেটা রোধ করতে গেলে পরিমান মত জমিতে জল দিতে হবে।আর তাতে ফল ফাটার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *