দুর্গাপুর: লক্ষ লক্ষ টাকার আর্থিক প্রতারণার দায়ে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে দুর্গাপুরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর মানস রায় ও তাঁর ছেলে অভ্রনীল রায়কে। এই ঘটনায় তোলপাড় দুর্গাপুরে রাজনৈতিক মহল।
তবে ধৃতদের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগ নেই, এমন দাবি করেছেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার অভিষেক গুপ্তা। বিরোধীদের দাবি, ওই পুলিশ আধিকারিক যে তৃণমূল নেতৃত্বের হয়ে কাজ করছেন, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে! একজন পুলিশ আধিকারিক হয়ে তৃণমূলের ভাবমূর্তি বাঁচাতে চাইছেন।
তবে তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পরিষ্কার বলেছেন, মানস প্রথম থেকেই বদ, প্রশাসন আইনমোতাবেক কাজ করেছে, মমতা ব্যানার্জি এই ধরনের কাউকে রেয়াত করবেন না।

বুধবার ধৃতদের পুলিশি হেফাজত চেয়ে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করার সময় বিজেপি নেতৃত্বের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় মানস ও তার ছেলেকে। চোর চোর স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি সহ সাধারণ মানুষ।
২০১৭সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কাউন্সিলর ছিলেন মানস রায়। তাঁর বাড়ি দুর্গাপুরে গোপাল মাঠে। ছেলে অভ্রনীলকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের প্রভাব খাটিয়ে কম্পিউটার, মোবাইল, গাড়ি কিনে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেতে থাকে তাঁর বিরুদ্ধে। আবার রাজ্যের মন্ত্রী, সাংসদদের নাম করেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই টাকা চাইতে গিয়ে হুমকি শুনতে হয়েছে বলেও অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালে বেনাচিতির মনোজ কুমার সাউয়ের মোবাইল দোকান থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা মূল্যের দুটি মোবাইল নেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পাঠিয়ে দেবেন বলে জানান। সেই টাকা চাইতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হয় বলে দোকান মালিক মনোজ কুমার সাউ মঙ্গলবার দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাতেই গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন কাউন্সিলর ও তাঁর ছেলে অভ্রনীল রায়কে।
পুলিশ জানায়, প্রতারণা সহ নানা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, ডেপুটি কমিশনারের ওই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছেন দুর্গাপুর পশ্চিম বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ও কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী।
বিজেপি বিধায়ক বলেন, “তৃণমূলের তো উপর থেকে নিচু পর্যন্ত দুর্নীতিতে ভরে গেছে। তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা ক্ষমতার জোরে টাকা লুট করেছেন। আর ডেপুটি কমিশনার বলছেন ওর সাথে রাজনৈতিক কোন যোগ নেই। তৃণমূলের জেলা সভাপতির মত কথা বলছেন একজন পুলিশ অধিকারকে,এর থেকে লজ্জার আর কি আছে? তৃণমূলকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।”
জেলা কংগ্রেসের সভাপতি বলেন, “তৃণমূলের দলদাস পুলিশের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানান জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাজনীতিতে এইসব কাজ বরদাস্ত করা হবে না। প্রতারকরা নেতা-মন্ত্রীদের নাম করেই প্রতারণা করে।




Be First to Comment