জাল ফেলে বাগরোলটিকে ধরা হয়। নিজস্ব ছবি
নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: পৃথিবীর ১১টা দেশে বাঘরোল বা ফিশিং ক্যাটের সন্ধান মিললেও তাদের সংখ্যা কমতে কমতে এখন মাত্র তিন হাজারের আশপাশে এসে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে মূলত হাওড়াতেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাঘরোল। এ বার সেই বাঘরোল-এর দেখা মিলল দুর্গাপুরে।
বাঘ নয় তবু তার নাম বাঘরোল। পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজ্য প্রাণী’ বাঘরোল বা ফিশিং ক্যাট৷ উচ্চতা বিড়ালের থেকে বেশি। গায়ে ছোপ ছোপ দাগয রাজ্য প্রাণী হিসেবে যাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, সেই বাঘরোল এখন ‘বিপন্ন’ তালিকাভুক্ত। প্রাণীটিকে বাঁচাতে প্রতিটি পঞ্চায়েতে ‘বাঘরোল সুরক্ষা কমিটি’ গড়ার ডাক দিয়েছে রাজ্য বন দফতর ও হাওড়া জেলা পরিষদ।
হাওড়াতে নয় এ বার সেই বাঘরোল দুর্গাপুরে দেখতে পেয়ে মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে | বাঘরোলটি অসুস্থ ভেবে অনেকে গাড়ি থামিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে অনেক মানুষ । খবর পেয়ে উদ্ধার করতে এসে বাগরোলের কামড়ে আক্রান্ত হন বনদফতরের এক কর্মী, এবং আক্রান্ত হন আরও এক স্থানীয় যুবক। হইচই পড়ে গেল এলাকা জুড়ে।
বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার লাগোয়া কলাবাগান বস্তি হয়ে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে বসে ছিল বাঘরোলটি । পথ চলতি মানুষ, বাইকআরোহী এবং চারচাকা থামিয়ে এই বন্যপ্রাণীকে দেখতে ভিড় জমায় বহু মানুষ । স্থানীয়রা খবর দেন দুর্গাপুর বনবিভাগে।
বনদফতরের কর্মীরা জাল ফেলে বাগরোলটিকে ধরার চেষ্টা করে। তখনই বনদফতরের এক কর্মী পঙ্কজ রায়ের হাতে কামড় বসায় ওই বাগরোলটি। ধারালো নখে আক্রান্ত হন রাহুল বাউড়িও নামে স্থানীয় এক যুবক ।
বনদফতরের কর্মীদের প্রায় এক ঘণ্টার আপ্রাণ প্রচেষ্টায় জালে ধরা পড়ে বাঘরোলটি । পঙ্কজ রায় বলেন, এই জঙ্গলে বিলুপ্তপ্রায় বহু বন্যপ্রাণী রয়েছে। বাগরোলটিকে উদ্ধার করতে গিয়ে তিনি বাঘরোলের নখের আঘাতে আক্রান্ত হন । উদ্ধারে সাহায্য করতে গিয়ে স্থানীয় এক যুবকও জখম হন বাঘরোলের কামড়ে এবং নখে। কোনো রকমে উদ্ধার করে বাঘরোলটি বনবিভাগের কর্মীরা নিয়ে যান। বাঘরোলটিকে শারীরিক পরীক্ষা করে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
Be First to Comment