প্রবোধ দাস, পুরুলিয়া: পাঁচ বছর ধরেও আবাস যোজনার টাকা কোথায় গেল তার সদুত্তর দিতে পারছে না কাশীপুর ব্লক প্রশাসন। পঞ্চায়েতের দাবি, আবাস যোজনায় টাকা পেয়েও ঘর তৈরি করছেন না উপভোক্তা। তাই প্রথমে পঞ্চায়েত ও পরে পঞ্চায়েত সমিতি বাড়ি তৈরি না কাজ করার ব্যাখ্যা চেয়েছিল।
উপভোক্তার দাবি, কোনও টাকাই ঢোকেনি তাঁর ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের মণিহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। ওই উপভোক্তা ধারণা সিং সর্দারের দাবি, গত পাঁচ বছর ধরে চলছে এই টানাপড়েন। প্রাপ্য টাকা কোথায় গেল, তা জানতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন কাশীপুর ব্লক প্রশাসন।
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, ২০১৯- ২০২০ অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী তথা বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল রাধামাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলাকে। ২০১৯ সালের অগস্টে মণিহারা পঞ্চায়েতের তৎকালীন প্রধান চিঠি দিয়ে তাঁকে পঞ্চায়েতে ডেকে পাঠান। কেন তিনি বাড়ি তৈরি করছেন না, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

ধারণা বলেন, “পঞ্চায়েতের ওই চিঠি পেয়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আবাস যোজনার তার তালিকায় নাম আছে প্রথম জেনেছিলাম।কিন্তু কোনও টাকা পাইনি। পঞ্চায়েত ডাকার পরেই আদ্রার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যায়ের যে শাখায় অ্যাকাউন্ট আছে, সেখানে যোগাযোগ করি। তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, কোনও টাকা, আসেনি। তার নথি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কাছে জমা করেছিলাম।”
তাঁর প্রশ্ন, গত পাঁচ বছর ধরে ভাঙা বাড়িতে কোনও মতে দিন কাটছে। অথচ বাড়ি তৈরির জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জানাচ্ছে পঞ্চায়েতই। তাহলে টাকাটা কোথায় গেল!
এই ঘটনায় দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছে বিজেপি। মণিহারা পঞ্চায়েতে বিজেপির বিরোধী দলনেতা মলয় মিশ্র জানান, ওই মহিলার বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। প্রধানমন্ত্রী- আবাস যোজনার তালিকায় নাম ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কোনও টাকাই পাননি তিনি। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত জানাচ্ছে, টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু ওই মহিলার সঙ্গে ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখেছি, কোনও টাকা আসেনি। এই ঘটনাতেই স্পষ্ট আবাস যোজনার টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। ন্যায্য উপভোক্তার বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বারেবারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ হয়নি।”
ঘটনাটা ঠিক কী, সদুত্তর নেই পঞ্চায়েতের কাছ। প্রধান তৃণমূলের টিংকু কর্মকার বলেন, “যে সময়ের ঘটনা, তখন দায়িত্বে ছিলাম না। তবে বিষয়টি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখব”।




Be First to Comment