Press "Enter" to skip to content

ভোট আসে ভোট যায়, জলকষ্ট চিরসঙ্গী পুরুলিয়ার

প্রবোধ দাস, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া জেলার বড় কলঙ্ক হচ্ছে জলকষ্ট। পানীয় জলের জন্য হাহাকার করতে হয় জেলার মানুষকে। জলের দাবিতে ঘরের মা-বোনদের হাঁড়ি- কলসি নিয়ে রাস্তায় পথ অবরোধ করতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। নলকূপগুলো প্রায় অকেজো হয়ে গেছে। দুই একটায় জল পড়লেও বেশিরভাগ নল কূপে জল পড়ছে না। এবারের টাইম কলগুলো প্রায় চার মাস ধরে খেয়ালখুশি মতো জল সরবরাহ করছে। কথাও আবার জল দেওয়া হচ্ছে না । ফলে মানুষ পানীয় জলটুকু ঠিক মতো পাচ্ছে না।

পুরুলিয়া শহর, মানবাজার, কাশিপুর, হুড়া , নিতুরিয়া, সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ জল কষ্টের সমাধানের জন্য নিরুপায় হয়ে তাদের দাবি আদায়ে পথ আগলে বিক্ষোভ দেখায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে যায় স্থানীয় থানার পুলিশ প্রশাসন,পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা অবরোধ সামাল দিতে নিরুপায় হয়ে একমাত্র সমাধান প্রতিশ্রুতি, শুধু প্রতিশ্রুতি আর প্রতিশ্রুতি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি শুধু প্রতিশ্রুতিই থেকে যায়।

যতবার পুরুলিয়াতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসেছেন ততবার তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলে গেছেন, “এ মমতা দিদি পুরুলিয়া বাসিকো পিনেকা পানি নেহি দে সেকতাই। ইসে বড়া লজ্জা কি বাত আর কেয়া হো সেকতা”। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রচারে যেখানে যেখানে নির্বাচনী প্রচার সারতে গিয়েছে তার বেশিরভাগ জায়গায়, পুরুলিয়া জেলার বিজেপির প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোকে সামনে পেয়ে সেখানেই পানীয় জলের দাবি তুলেছে মানুষ।

অপরদিকে পুরুলিয়া পুরসভার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেছেন, “নদীগর্ভে জল একেবারে নিচে নেমে গেছে। একাধিক পাম্প থেকে জল উত্তোলন করা যাচ্ছে না। পুরুলিয়া শহরে মানুষের জল সরবরাহের জন্য আরো কয়েকটি পাম্প বসিয়ে শহরের জল সরবরাহার চেষ্টা করছি। “

কিন্তু জেলার, মানবাজার, কাশিপুর, নিতুরিয়া, হুড়া সহ একাধিক ব্লক আধিকারি থেকে শুরু করে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। ঠিকাদাররা তাদের ইচ্ছামতো কাজ করছে। এমনটাই দাবি তুলেছেন এলাকার মানুষেরা । জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি কানেকশন হয়ে গেল জল সরবরাহ হচ্ছে না। আবার কাশিপুর এলাকার বেশিরভাগ গ্রামে পানীয় জল সরবরাহের কাজও বন্ধ হয়ে গেছে।

এলাকায় তৃণমূল নেতারা দায়সারা মনোভাব দেখাচ্ছেন পিএইচএইচ দপ্তরে আধিকারিকদের দোহাই দিয়ে। পুরুলিয়া জেলার মানুষ এই জল কষ্ট থেকে কিভাবে রেহাই পাবে। সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।

অপরদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা জয়ী হওয়ার পরেই এইসব জালিয়াতি বন্ধ করে দেব। পুরুলিয়া জেলার মানুষকে আর জলের জন্য হাহাকার করতে হবে না।”

তবে জেলাবাসীর কথা, ভোট আসে ভোট যায়। নেতারা ক্ষমতা লাভ করেন। তারপরে জনগণের কথা ভুলে যান। বিজেপি যদি আবারও ক্ষমতায় আসে তাহলে কি এই চির কলঙ্ক পুরুলিয়ার ঘুচবে? না কি যে ছিল তাই থেকে যাবে?

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Comments are closed.