অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, আসানসোল: যাঁরা ওয়ার্ড ও এলাকায় পদে বসে আছেন, তাঁদেরকে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে প্রার্থীকে লিড দিয়ে। তা না হলে, ভোটের পরে তাঁদের চিহ্নিত করে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে । এমনই কথা বলেন, রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু ।
প্রধান বিরোধী দল হিসাবে বিজেপি এখনও তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। সিপিএমের প্রার্থী জাহানারা খান প্রচারে চালাচ্ছেন জোর কদমে । এমন পরিস্থিতিতে রবিবার দুপুরে আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে দলের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহাকে সামনে রেখে আরও একটি প্রস্তুতি সভা করল জেলা তৃণমুল কংগ্রেস।
এই সভায় আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার সর্বস্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে দলের সব শাখা সংগঠনের পদাধিকারীদের ডাকা হয়েছিল। এ দিনের এই সভা থেকে প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা নির্বাচনী বন্ড থেকে দিল্লিতে হওয়া ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক নিয়ে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি তথা এনডিএ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন।

তিনি বলেন, বিরোধীরা কেউ কিছু বলেননি। নির্বাচনী বন্ড যে শুধু ভারতে নয়, সারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুর্নীতি তা বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের স্বামী। আর এই দুর্নীতি থেকে দেশের মানুষের নজর ঘোরাতেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্যসব কথা বলছেন।
রাজ্যের আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এবারের নির্বাচনে দলের প্রার্থীকে দুবছর আগে উপনির্বাচনে জেতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে, মার্জিন আরও বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেন। তারজন্য এ দিন থেকে আরও বেশি করে সবাই এলাকায় ঘুরে ঘুরে জনসংযোগ করার জন্য দলের নেতা ও কর্মীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন মলয় ঘটক।
সভায় রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, রাজ্য সরকারের কাজ আরও বেশি করে মানুষের কাছে গিয়ে বলতে হবে। পাশাপাশি বলতে হবে, গত ১০ বছরে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি পরিচালিত এনডিও সরকার কী ভাবে বাংলাতে সবক্ষেত্রে বঞ্চিত করেছে।
দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু এ দিনের সভা থেকে দলের নিচু তলার নেতাদেরকে আরও একবার হুঁশিয়ারির সুরে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, “যাঁরা ওয়ার্ড ও এলাকায় পদে বসে আছেন তাঁদেরকে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে প্রার্থীকে লিড দিয়ে। তা না হলে, ভোটের পরে তাঁদেরকে চিহ্নিত করে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। দলের পদে থাকবেন আর দলকে কিছু দেবেন না, তা হবে না।”
দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এ দিনের সভায় বলেন, আসানসোল শহরের জিটি রোডে যে জেলা কার্যালয় আছে, সেটিকে এবারের নির্বাচনে মুল কার্যালয় করা হয়েছে। সেখানে আইটি সেলও করা হয়েছে। নিয়মিত দলের জেলা নেতৃত্ব সেখানে বসবেন। তারজন্য দায়িত্ব ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যেই দলের সাংসদ তার দু’বছরের কাজের খতিয়ানের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন। তা ছোট আকারে পুস্তিকা করে সব জায়গায় পাঠানো হবে। পাশাপাশি, জেলা পরিষদ, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডা এবং আসানসোল ও দুর্গাপুর পুরনিগমের কাজের খতিয়ান-সহ আলাদা আলাদা করে পুস্তিকা করতে বলা হচ্ছে। এগুলি দ্রুত তৈরি করে এলাকায় এলাকায় বিলি করা হবে।
এ দিনের সভায় লোকসভা নির্বাচনে শত্রুঘ্ন সিনহার নির্বাচনী বা ইলেকশন এজেন্ট হিসাবে আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম জানানো হয় । তাঁকে আলাদাভাবে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। জেলা সভাপতি বলেন, “অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় আমাদের কাছে খুব লাকি। তাই তাঁকে এবারের ইলেকশন এজেন্ট করা হয়েছে।”
এ দিনের সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি, আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক, বিধায়ক হরেরাম সিং, মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যরা।




Be First to Comment