বার্নপুর : চিকিৎসাধীন অবস্থায় পথ দুর্ঘটনায় আহত এক বৃদ্ধের মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়ালো বার্ণপুরে। আর এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত মৃত বৃদ্ধর পরিবারের সদস্যরা রবিবার সন্ধ্যায় আসানসোলের বার্ণপুরে হিরাপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ও দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিরাপুর থানা ও থানার সামনের এলাকায় উত্তেজনা ও ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ এতটাই বেড়ে যায় যে পুলিশ পরিবারের সদস্যদেরকে থানা থেকে বার করে দিতে বাধ্য হয়। শুধু তাই নয়, ধস্তাধস্তির জেরে ক্ষুব্ধ থানার ওসি পরিবারের সদস্যদেরকে সংযত হওয়া ও সংযম দেখানোর পরামর্শ দেন। এর জেরে থানার বাইরে রাস্তায় প্রচুর মানুষের ভিড় জমে যায়।
জানা গেছে, গত ১৪ মে সকালে অন্যদিনের মতো হিরাপুর থানার বার্ণপুরের রামবাঁধের বাসিন্দা দিন মজুর শশী ভার্মা সাইকেলে করে কাজে বেরিয়েছিলেন। বার্নপুর ক্রিকেট ক্লাবের কাছে একটি দ্রুতগামী বাইক তাকে এবং আরও দুজনকে ধাক্কা মারে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় এই দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য বার্নপুর আইএসপি বা ইস্কো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শশী ভার্মার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেই হাসপাতালে রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরিবারের সদস্যরা এদিন বিকেলে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে হিরাপুর থানায় তার মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। পুলিশ অভিযুক্ত বাইক আরোহীকে বাঁচাতে ও এফআইআর নথিভুক্ত না করার অভিযোগ তোলেন তারা। মৃত বৃদ্ধর ভাইপো আকাশ ভার্মা বলেন, আমার কাকা শশী ভার্মাকে এবং রাস্তা দিয়ে যাওয়া আরও দু’জনকে ধাক্কা দেয়। যে কারণে তার মাথায় আঘাত লাগে। তাকে দ্রুত বার্নপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আকাশ ভার্মা অভিযোগ করেন, তিনি যখন বাইক চালক যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেছিলেন, তখন হিরাপুর থানার অফিসাররা এফআইআর নথিভুক্ত করতে অস্বীকার করেছিলেন। শুধু তাই নয়, এক্স-রে করার অজুহাতে অভিযুক্ত যুবককে ঘটনাস্থল থেকে পালাতে সাহায্য করে বার্নপুর হাসপাতালের কর্মীরাও।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত যুবককে তিনি সঠিকভাবে চিনতে পারছেন না। তবে তিনি জানেন, ওই যুবক সেল আইএসপির একজন কর্মচারীর ছেলে ও বেশ প্রভাবশালী। যে কারণে পুলিশ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
এছাড়াও, যখন ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়েছিল, তখন পুলিশ অফিসার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেননি। তিনি অজুহাত দেওয়া শুরু করেছিলেন। থানার ওসি সৌমেন্দ্রনাথ সিংহ ঠাকুরের অনেক বোঝানোর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যায়।



Be First to Comment