Press "Enter" to skip to content

লোকসভা নির্বাচনে আসানসোলে ‘স্থানীয় কাউকে’ প্রার্থী করার দাবি উঠছে বিজেপির অন্দরেই

অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, আসানসোল: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য আসানসোল কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে ভোজপুরি গায়ক নায়ক পবন সিংয়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি প্রার্থী পদ থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন। এরপর আসানসোলে বিজেপি প্রার্থী কে হবে, তা নিয়ে নানা মহলে নানা ধরনের জল্পনা চলছে।

শুক্রবার দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডের বাজার লাগোয়া বড় পোস্ট অফিস সংলগ্ন বিজেপি অফিসে একটি সাংবাদিক সম্মেলন হয়। বিজেপি ওবিসি মোর্চা জাতীয় কমিটির সদস্য শঙ্কর চৌধুরী, রাজ্য কমিটির সদস্য বিবেকানন্দ ভট্টাচার্য, জেলা কমিটির সদস্য স্বপন রায় এই সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে শঙ্কর চৌধুরী বলেন, “২০১১ সালে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন মনে হয়েছিল একজন মহিলা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তাই এখানে অন্তত মহিলারা নিরাপদ থাকবেন। কিন্তু এখানে যেভাবে সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটছে তাতে মানুষের সেই বিশ্বাস ভেঙে গেছে। এছাড়াও গোটা বাংলায় সর্ব ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে দুর্নীতি হয়েছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে গোটা পশ্চিমবঙ্গ দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সেই কারণে বিজেপির পক্ষ থেকে একটানা আন্দোলনও চালানো হচ্ছে।”

শঙ্করবাবু আরও বলেন, “আসানসোল কেন্দ্রে ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী বিশাল জয় পেয়েছিলেন। আর এটা অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল কারণ এখানকার বিজেপি নেতা ও কর্মীরা বিজেপি প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে সর্বস্ব উৎসর্গ করেছিলেন। সেই সব বিজেপির নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। এমনকি তাদের জেলেও পাঠানো হয়। পাশাপাশি তাদের উপর অত্যাচার করা হয়, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপি নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা মাঠ ছাড়েননি। এই আসনটি পরপর দুবার জিতে নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দিয়েছিলেন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা।”

তিনি আরও বলেন, “এত কিছু সত্ত্বেও এ বার দেখা গেল, আসানসোল কেন্দ্রের জন্য ভোজপুরি গায়ক নায়ক পবন সিংয়ের নাম ঘোষণা করা হলো দিল্লি থেকে। পরে অবশ্য পবন সিং ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের লড়াই করা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন। এবার আমার এবং দলের কর্মীদের মনের ইচ্ছে, দিল্লি হাইকমান্ড এবার শুধুমাত্র আসানসোলের জন্য স্থানীয় কোনও নেতাকে টিকিট দেবেন ।”

শঙ্কর চৌধুরী আরও বলেন, অনেকেই বিজেপিতে আসেন। দল বাবুল সুপ্রিয় বা পবন সিংয়ের মতো সেলিব্রিটিদের বিজেপির প্রার্থী করে। দলের নেতা ও কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার কারণে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করেন । তারপরে দেখা যায়, তারা হয় অন্য কোনও দলে চলে যান বা দলের জন্য যে কাজ করা উচিত তা করে না।
তাই বিজেপি কর্মীদের আশা, এবার আসানসোলের স্থানীয় কোনও নেতা আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সেইরকম কোনও লড়াকু নেতাকে টিকিট দেওয়া উচিত। যারা হৃদয়ে পদ্ম ফুল নিয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করে চলেছেন।

একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, দলের নেতৃত্ব যদি আসানসোলের বাইরে থেকে কাউকে লোকসভার টিকিট দেন, তাহলে আসানসোলের প্রতিটি বিজেপি কর্মী তাকে জয়ী করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবেন নিঃশর্তে । তবুও আসানসোলের বিজেপি কর্মীরা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ইচ্ছা ও অনুরোধ রাখছেন, স্থানীয় মাটির নেতাকে লোকসভার টিকিট দেওয়ার জন্য। তারা বলেন, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে বাবুল সুপ্রিয়কে টিকিট দিয়ে বিজেপি দেখেছে একজন বহিরাগত, বহিরাগতই থেকে যায়। তাকে যতই মূল্য দেওয়া হোক না কেন।

প্রসঙ্গত, পবন সিং লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর পরে আসানসোলে কাকে পদ্ম প্রার্থী করা হবে, তার কোন আভাস পাওয়া যায় নি। তবে অন্য এক ভোজপুরি গায়িকার নামও আলোচনার মধ্যে ছিলো। আরও কয়েকজনের নাম হাওয়াতে ভাসছে | তবে বিজেপি কবে আসানসোলের নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে, তা জানা যায়নি।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *