উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উন্নয়ন চলছে তবুও সুন্দরবনের মানুষকে বিপদ মাথায় নিয়ে ভাঙা জেটি দিয়েই পারাপার করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার ফলে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে সুন্দরবনের রায়দিঘির জটা ও কুলতলির দেবীপুরের জেটিঘাট।
দুটি ঘাটেই রেলিং নেই। ঠাকুরান নদীতে ভাটা পড়লে প্রায় ৫০ ফুট হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়ে ভুটভুটিতে উঠতে হয়। ভাটার পর পাকা জেটিঘাটের উপর কাদার পলি জমে পিচ্ছিল হয়ে যায়। এর মধ্যে পারাপার করাই মুশকিল। একটু বেসামাল হলেই সলিল সমাধি হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ওই জেটি ঘাট দিয়ে মানুষকে পারাপার করতে হয়
রায়দিঘি বাজার থেকে জটা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮ কিমি রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। ওই রাস্তা ধরেই জেটি ঘাটে পৌঁছতে হয়। খানা খন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে জেটি ঘাটে যেতেই মানুষ নাজেহাল হয়ে যায়।
একই অবস্থা কুলতলি দেবীপুর ঘাটের। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ভুটভুটিতে চলে পারাপার। দুই ঘাটেই নেই আলো। সন্ধ্যার সময় যাত্রীদের এখানে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ পরিচালিত ওই দুই ঘাটের মধ্যে দেবীপুর ঘাটের কাছে কোনো পানীয় জল, শৌচাগার বা ভালো যাত্রী শেড নেই। আবার জটার ঘাটে যাত্রী শেড থাকলেও সেটি খুব ছোট।ওই দুই ঘাট দিয়ে ওই নদী পারাপার করে কুলতলির ভুবনেশ্বরী, মৈপিঠ, দেউল বাড়ি, কাটামারি-সহ ২০টি গ্রামের মানুষ রায়দিঘি বা ডায়মন্ডহারবারে আসে। অসুস্থ মানুষের পক্ষে ওই জেটিঘাট পারাপার হওয়া খুবই মুশকিল।
ভুটভুটিতে কোনো ছাউনি নেই। বর্ষায় ভিজতে হয়। আর গ্রীষ্মের সময় চড়া রোদে বসতে হয় যাত্রীদের। কুলতলি ও মথুরাপুর ২ নং ব্লকের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ ওই ফেরিঘাট দিয়ে পারাপার করে। তার মধ্যে আবার ওই ভুটভুটি চালকদের শংসাপত্র নেই। এর জন্য কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। ফলে মাঝে মধ্যে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পারাপার চলে। এতে যে কোনও মুহুর্তে বিপদ ঘটতে পারে।
কয়েক জন নিত্যযাত্রী বলেন, কোনো নিয়মকানুন না মেনেই ভুটভুটি পারাপার চলে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পারাপার হয়। বিপদের আশঙ্কা নিয়েই আমাদের যাতায়াত করতে হয়। রাতে অসুস্থ রোগী নিয়ে যেতে হলে মাঝিরা ইচ্ছে মতো টাকা চায় বলে অভিযোগ।স্থানীয়দের দাবি,ওই ফেরি ঘাটের পরিবর্তে নদীর উপরে সেতুর দাবি আমরা প্রশাসনকে বহুবার জানিয়েছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেল, ঘাট দুটির কী অবস্থা তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
Be First to Comment