আসানসোল: দোলের দিন পশ্চিমবঙ্গে জেলা স্তরে সাংগঠনিক সভাপতিদের পরিবর্তন করা হয়। শুক্রবার এই ঘোষণা করা হয়েছে বিজেপির তরফে। রাজ্য বিজেপির ২৫টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকা মতো আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়েছেন দেবতনু ভট্টাচার্য। দেবতনু ভট্টাচার্য বিজেপিতে বিভিন্ন পদে রয়েছেন। গত লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম থেকে প্রার্থীও হয়েছিলেন। ২০২৬ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে তার কাঁধে বড় দায়িত্ব রয়েছে।
এদিকে, নতুন দায়িত্ব পেয়ে শনিবার সকালে আসানসোলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া দলের জেলা কার্যালয়ে আসেন দেবতনু ভট্টাচার্য। তাঁকে সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান বিদায়ী সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা। দলের তরফে দেবতনু ভট্টাচার্যকে আবীর মাখিয়ে ও পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। করানো হয় মিষ্টিমুখ।
প্রথম দিনই জেলা কার্যালয়ে এসে সবাই নিয়ে চলার বার্তা দেন নতুন সভাপতি। বিধানসভা নির্বাচন একবছর বাকি। কিন্তু সভাপতি এখন থেকে বুথ স্তরে নেমে নির্বাচনে নেমে পড়ার কথা জানান।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নতুন কিছুর দায়িত্ব পাওয়াটাই লড়াই। লড়াই সব সময় কঠিনই হয়। কিন্তু আমরা এই লড়াই লড়তে জানি। সবাইকে নিয়ে সেই লড়াই করবো। এখন যারা বাংলায় সরকার চালাচ্ছে, তারা মানুষের জন্য কিছু করেনা। তাদের একটাই কাজ। তা হলে রাজ্যের মানুষকে শোষণ করে নিজেদের পেট ভরানো। এরা শুধু অনৈতিক কাজ করে। তিনি আরো বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা এখন আর পার্টির বা দলের নেই। এখন এই লড়াইটা বাংলার মানুষের বা জনগণের। বাংলার মানুষেরা মনঃস্থির করে নিয়েছেন, এই সরকারের পরিবর্তন করার জন্য। তাই সরকার পরিবর্তন হবেই। আর এটাই ভারতীয় জনতা পার্টির ক্যাপিটাল। আমরা সেখানে অনুঘটকের কাজ করবো। শাসক দলের বুথ দখল করাটা আটকাতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হবে বুথ রক্ষা করে সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ানোর ব্যবস্থা করা। মানুষ ভোট দিতে পারলেই ২৬-এ সরকার পরিবর্তন হবেই।
ঠিক এই মুহূর্তে আসানসোল জেলায় দলের সাংগঠনিক শক্তি ও সংগঠনের উপরে আশাবাদী দেবতনু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “আমার ও আমাদের লক্ষ্য হলো সাধারণ ভোটারদের কাছে যাওয়া। তাদেরকে দুটো জিনিস বোঝানো। প্রথমটা হল, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে, বিজেপির ভিশন কি। তারা বাংলার মানুষের জন্যে কি করতে চায়। আর দ্বিতীয়টা হল , রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যায় অবিচার সাধারণ মানুষদের মনে করানো। এই কাজটা আমাদের বুথ স্তর থেকে করতে হবে। দলের তরফে ইতিমধ্যেই বুথ রক্ষা করতে বুথ স্বশক্তিকরণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বুথে এখন কর্মীরা আসছেন। তাদের সঙ্গে আমাদেরকে থাকতে হবে। নিয়মিত ভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে। তাদেরকে কাজ বুঝিয়ে দিতে হবে। সময়ে সময়ে বৈঠক করতে হবে। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে”।
প্রসঙ্গত, বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে বিগত বছরগুলিতে, আসানসোল সাংগঠনিক জেলায় নির্বাচনে পদ্ম শিবিরকে হারের মুখে পড়তে হয়েছে। শেষ লোকসভা নির্বাচনে সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে প্রার্থী করেও, আসানসোলের গড় ধরে রাখতে পারেনি পদ্ম শিবির।
বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য জোন কো- কনভেনার (৮টা লোকসভা এলাকা) ছিলেন। তিনি বর্তমানে রাজ্য কমিটির সদস্য। তাঁর মা প্রয়াত কৃষ্ণা ভট্টাচার্য বিজেপির রাজ্য নেত্রী ছিলেন। বাম আমলে বহু লড়াই আন্দোলন করেছিলেন কৃষ্ণাদেবী। তাঁর ছেলে দেবতনু আরএসএস অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সদস্য ছিলেন। হিন্দু জাগরন মঞ্চের নেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন এই দেবতনু। বলতে গেলে পারিবারিক সূত্রেই তিনি প্রথমে আরএসএস ও পরে বিজেপির সঙ্গে দল করা শুরু করেন।




Be First to Comment