উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি : সুন্দরবনে ধানের পাশাপাশি লবণ সহনশীল বিকল্প চাষে কৃষকদের পাশে এগিয়ে এল কয়েকটি সংস্থা। হারিয়ে যাওয়া নটে শাকের বীজের ১০ রকম প্রজাতির বীজ নিয়ে পরীক্ষা মূলক চাষের কাজ চলছে সুন্দরবনের কুলতলি ও বাসন্তী ব্লকে।
নটে শাকের এই ১০ রকম প্রজাতির মধ্যে কোন কোন প্রজাতির চাষ সুন্দরবনে ভালো হতে পারে তা নিয়ে পরীক্ষা মূলক কাজ ও শুরু করেছে নিমপীঠ লোকমাতা রানি রাসমণি মিশন। তারা হায়দরাবাদের ওয়াসান নামে একটি সংস্থা ও বাসন্তীর চম্পা মহিলা সোসাইটির সহায়তায় এই কাজ শুরু করেছে সুন্দরবনের দুটি ব্লকে ।
শুক্রবার এই সংস্থাগুলির উদ্যোগে সুন্দরবনের কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব মধ্য গুড়গুড়িয়ার বহমুখী ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৫০ জন কৃষকদের নিয়ে নটে শাকের ভ্যারাইটি বীজের ওপর একটি প্রশিক্ষন শিবির হয়ে গেল। যাতে সুন্দরবনের বাসন্তী ও কুলতলি ব্লক থেকে বহু পুরুষ ও মহিলা কৃষক অংশ নেন।

এ দিন এই শিবিরে নটে শাকের বিষয়ে কৃষকদের কাছে বিস্তারিত আলোকপাত করেন নরেন্দ্রপুর শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমের কৃষি শস্য বিশেষজ্ঞ সুকোমল সরকার, গবেষক অনণ্য ধর, হায়দ্রাবাদের ওয়াসন সংস্থার সদস্য শুভদীপ মণ্ডল, নিমপীঠ লোকমাতা রানী রাসমণি মিশনের সদস্য দেবীপ্রসাদ রায়, মৃণাল সামন্ত, অশোক হালদার-সহ আরও অনেকে।
এ দিন এই চাষ কিভাবে করতে হবে, কি ভাবে মাটির যত্ন নিতে হবে,কতটা পরিমাণ জৈব সার দিতে হবে, রোগ পোকার হাত থেকে কিভাবে ফসল কে রক্ষা করতে হবে তাঁর ওপর বিশদে আলোচনা করা হয়।তা ছাড়া এদিন এই এলাকায় নটে শাকের জমিতে গিয়ে কৃষকরা কোন প্রজাতির নটে শাখের গ্রোথ এসেছে অর্থাৎ কোন প্রজাতির নটে শাকের চাষ এই এলাকায় করা উচিত তাঁর ওপর তাদের অভিমত প্রকাশ করেন।চিহ্নিত করেন সেই সব গাছ কে।
এ ব্যাপারে এ দিন কৃষি বিশেষজ্ঞ সুকোমল সরকার বলেন,গুরুত্ব হীন হয়ে যাওয়া এই ধরনের চাষের প্রতি চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে এবং নটে শাকের প্রতি কৃষকদের আরো বেশি করে সচেতন করতে হাতে কলমে একটি প্রশিক্ষণ শিবির হয়ে গেল।
সম্পূর্ণ জৈব উপায়ে এই চাষ করা হচ্ছে বলে এদিন জানালেন লোকমাতা রানি রাসমণি মিশনের সদস্য মৃণাল সামন্ত। তিনি বলেন, “আমি আমার জমিতে হারিয়ে যাওয়া এই নটে শাকের ১০ রকম প্রজাতির চাষ করেছি। কিছু গাছে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে রোগপোকার আক্রমণ হয়েছে”।
তবে রোগ পোকার হাত থেকে নটে শাকের ফলন বাঁচাতে ও এই ধরনের চাষকে ব্যবসায়িক ভাবে চাষ করে কত বেশি মুনাফা আসতে পারে সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। লবণ সহনশীল সুন্দরবনে বিকল্প এই চাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থান আরও মজবুত হতে পারে বলে মনে করেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।




Be First to Comment