অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: আসানসোল শহর তথা আসানসোল পুরনিগমের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বুধবার আসানসোল সাউথ ব্লক কংগ্রেসের তরফে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
তবে পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় এদিন না থাকায় তার অনুপস্থিতিতে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয় চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। এই বিষয়ে আসানসোল সাউথ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি শাহ আলম খান বলেন, এদিন চারটি দাবির একটি স্মারক লিপি আসানসোল পুরনিগমে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অবৈধ পার্কিং।
তিনি আরো বলেন, আসানসোল শহরের ৯ নম্বর পার্কিংয়ে লোকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনু্যায়ী ৩ ঘন্টায় বেশি হলে পার্কিং ফি দ্বিগুণ হয়। কিন্তু এই পার্কিং জোনে অবৈধভাবে ১ ঘন্টা পরে ফি দ্বিগুন নেওয়া হচ্ছে।
আগের মেয়র কোন আইন অনুযায়ী ২০২৫ সাল পর্যন্ত পার্কিং চালানোর অধিকার দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে আগে পার্কিংয়ের জন্য ৫ টাকা নেওয়া হতো। এখন কোথাও ১০ টাকা, কোথাও ২০ টাকাও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এইসব বেআইনি কাজ দেখার কেউ নেই।
পাশাপাশি তিনি বলেন, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্ম তলাও এবং রাম তলাও নামে দুটি পুকুর দখলের কারণে ছোট হয়ে গেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বলছেন পুকুর ভরাট করা যাবে না, তখন এখানে যেভাবে পুকুর ভরাট হচ্ছে তাও চিন্তার বিষয়। কিন্তু এখানে এই বেআইনি কারবার দেখার কেউ নেই। কোথাও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
কাল্লা এলাকায় পাথর খাদান ভরাট করে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বিষয়েও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এদিন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে শহরের মধ্যে জিটি রোডের ভলভো বাসস্ট্যান্ড। এই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা বলেন, ব্যস্ততম এলাকায় ওই বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় সেখান দিয়ে সাধারণ মানুষদের যাতায়াত করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে, যেখানে শহরের বাইরে দুটি বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনোটিই চালু নেই। কোন কাজেই সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না।
এই সমস্ত বিষয়ে এদিন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। পুর চেয়ারম্যান আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এইসব দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্যদিকে, এইসব দাবিতে আরো এক কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি আসানসোল পুরনিগম ও একাংশ তৃণমূল নেতাদেরও নিশানা করে বলেন, এখন আসানসোল পুরনিগম এলাকায় যা কিছু বেআইনি কাজ হচ্ছে, তা তৃণমূল নেতাদের সমর্থন ছাড়া সম্ভব নয়। রাজ্যে যারাই বেআইনি কাজ করছে তারাই তৃণমূলের সমর্থক এবং তৃণমূল নেতারা তাদের মাথায় হাত রেখেছেন। সেই কারণেই তারা বিনা বাধায় এইসব কাজ করে যাচ্ছেন।
একদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব ধরনের বেআইনি কাজ বন্ধ করার কথা বললেও তার দলের বিধায়ক, কাউন্সিলর এবং ছোট নেতারা অবৈধ কাজে জড়িত রয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, কয়লা চোরাচালানের সাথে যুক্ত তৃনমুল কংগ্রেসের নেতারা এখন দুর্গাপুর থেকে ধানবাদ পর্যন্ত জাতীয় সড়ক বরাবর জমি মাফিয়াদের সাথে যোগ দিয়েছেন। এখন তাদের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হলো এই অবৈধ জমি ব্যবসা।
কংগ্রেসের স্মারকলিপি দেওয়ার অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুকুর ভরাট, পাথর খাদান ভরাট সহ বিভিন্ন বিষয়ে এদিন একটি স্মারকলিপি কংগ্রেস জমা দিয়েছে । যে সমস্ত অনিয়ম চলছে সেই সব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। তার পর আবার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলে জানান তিনি।
Be First to Comment