Press "Enter" to skip to content

কয়লা পাচার মামলায় ট্রায়াল শুরু সিবিআই আদালতে, প্রথম দিনে সাক্ষ্য কোল ইন্ডিয়ার দুই আধিকারিকের

আসানসোল : শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশা মতোই মঙ্গলবার থেকে আসানসোল সিবিআই আদালতে কয়লা পাচার মামলার ট্রায়াল শুরু হল। এদিন ট্রায়াল শুরুর প্রথম দিনে এই মামলায় যাদের নামে চার্জ গঠন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর এজলাসে হাজির ছিলেন।

আজ সকাল এগারোটার পরে ট্রায়াল শুরু হয়। ট্রায়াল শুরুর প্রথম দিন সাক্ষ্য দানের জন্য সিবিআই আদালত থেকে নোটিশ দিয়েছে কোল ইন্ডিয়ার তরফে “স্যাংকশনিং অথরিটি বা অনুমোদনকারী ব্যক্তি ” হিসেবে ডেপুটি ডিরেক্টর ও চীফ জেনারেল ম্যানেজার বা সিজিএম ( পার্সোনাল) পদমর্যাদার দুই আধিকারিককে। যার মধ্যে একজন এসেছিলেন দিল্লি থেকে এবং অন্যজন এসেছিলেন কলকাতা থেকে।

এই কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই ১২ জন পাবলিক সারভেন্ট বা সরকারি অফিসারের নামে চার্জ গঠন করেছে। এরা কোনও না কোনও সময় ইসিএলের সদর দপ্তর, এরিয়া ও সিআইএসএফ ও নিরাপত্তা বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন বা আছেন। সেই ১২ জনের মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য কোল ইন্ডিয়ার তরফে সিবিআইকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে অনুমোদন বা স্যাংকশন দেওয়া হয়েছে।

তাই এদিন দুই আধিকারিক সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন। এই ৯ জন হলেন তন্ময় দাস, সুশান্ত বন্দোপাধ্যায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সুভাষ চন্দ্র মৈত্র, মুকেশ কুমার, অভিজিৎ মল্লিক, দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়, অমিত কুমার ধর এবং নরেশ সাহা। বাকি তিনজনের স্যাংকশন এখনো পাওয়া যায়নি বলে সিবিআই আদালত সূত্রে জানা গেছে।

এদিন এজলাসে ৯ জনের হয়ে তাদের দুই আইনজীবী শেখর কুন্ডু ও সোমনাথ চট্টরাজ দুই স্যাংকশনিং অথরিটির কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেন। বিচারকের সামনেই দুই আইনজীবী তাদের কাছ থেকে জানতে চান, গোটা বিষয়টি সম্পর্কে তারা কতটা অবগত আছেন? তারা কি সিবিআইকে কোনকিছু দিয়েছেন? কার নির্দেশে তারা এই ৯ জনকে অনুমোদন করেন? দুই আইনজীবীর এইসব প্রশ্নের তেমন কোন সদুত্তর তারা দিতে পারেননি।

তারা শুধু বলেন, আমরা যা করেছি, তা উর্ধতন আধিকারিকদের নির্দেশ পালন মাত্র। এদিন দু’দফায় দু’ঘন্টারও বেশি সময় ধরে এই সাক্ষ্য দান পর্ব চলে। এরমধ্যে দুই আইনজীবীর সঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমারের বাদানুবাদ হয়।
এদিন সাক্ষ্য দান পর্ব শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বলেন, পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ হবে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি।
সিবিআই আদালত সূত্রে জানা গেছে, সেদিন আরো দুজনকে নোটিশ পাঠিয়ে সাক্ষ্য দানের জন্য ডাকা হবে।

প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকবার নানা কারণে পিছিয়ে যাওয়ার পরে, শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর আসানসোল সিবিআই আদালতে কয়লা পাচার মামলার চার্জ গঠন হয়।
উল্লেখ্য, কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই মোট তিনটি চার্জশিট আসানসোল সিবিআই আদালতে জমা দিয়েছে। তাতে ৫০ জনের নাম আছে। তার মধ্যে অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র এখনো ফেরার। তাকে সিবিআই ধরতে না পারায়, চার্জশিটে পলাতক বা এ্যাবসকন্ড দেখানো হয়েছে। শুনানি চলাকালীন একজন মারা গেছেন। যে কারণে সিবিআইয়ের মোট ৪৮ জনের নামে চার্জ গঠন করার কথা। ইতিমধ্যেই চার্জ গঠনের প্রক্রিয়ায় কার বিরুদ্ধে কোন ধারা দেওয়া হয়েছে তা সিবিআই আদালতে জানিয়েছে। এই ৪৮ জনের মধ্যে ব্যক্তিগত বা ইনডিভিজুয়াল তিনজনের নামে চার্জ গঠনের কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো এই বিকাশ মিশ্র। বাকি দুজন হলো অনুপ মাজি ওরফে লালা ও রত্নেশ্বর ভার্মা ওরফে রত্নেশ।

এর পাশাপাশি আরো ২৩ জনের নামে একসঙ্গে, ১০ সরকারি কর্মী বা পাবলিক সারভেন্ট ও ১২ টি কোম্পানির নামে এই মামলায় চার্জ গঠনের কথা বলা হয়েছে।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *