অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: আসানসোলে সিবিআই আদালতে আগামী ২৫ নভেম্বর সোমবার কয়লা পাচার মামলায় চার্জ গঠন করা হবে। সোমবার এই মামলার অভিযুক্তদের আইনজীবী ও সিবিআইয়ের আইনজীবী বা পিপির সওয়াল-জবাব শুনে এমনই নির্দেশ দেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।
সেদিন সব অভিযুক্তকে আদালতে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ বিচারক এদিন দিয়েছেন। এদিন অবশ্য শুনানির সময় অভিযুক্তদের কেউ তেমনভাবে এজলাসে ছিলেন না। গত বৃহস্পতিবার এই কয়লা পাচার মামলার চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
সোমবার সবমিলিয়ে দু’ঘন্টার মতো শুনানি হয়। এদিন শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবীকে অভিযুক্তদের প্রধান তিন আইনজীবীর একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। তার মধ্যে অন্যতম হলো, চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে নাম থাকা ১০০ জনের বয়ান বা স্টেটমেন্ট নথিভুক্ত না থাকা। এছাড়াও এমন কিছু ধারা অভিযুক্ত হিসাবে পাবলিক সারভেন্ট বা সরকারি কর্মী ও ব্যক্তিগত বা ইনডিভিজুয়ালদের দেওয়া হয়েছে, যা আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য হয় না।
চার্জশিটের দাবি করা তথ্যের সঙ্গে একটা ধারার সঙ্গে অন্য একটি ধারা মিলছে না বা মিস ম্যাচ করছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারকও সিবিআইয়ের আইনজীবির কাছে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চান। কিন্তু সিবিআইয়ের আইনজীবী তেমনভাবে কোন কিছু বলতে পারেননি। তখন অভিযুক্তদের তিন আইনজীবী শেখর কুন্ডু, সোমনাথ চট্টরাজ ও অভিষেক মুখোপাধ্যায়কে বিচারক বলেন, ট্রায়াল যখন শুরু হবে, তখন আপনারা আবার তথ্য সহ সওয়াল করবেন। তখন তদন্তকারী অফিসার তার জবাব দেবেন। জবাব সন্তোষজনক না হলে, তখন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার আসানসোল সিবিআই আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবি রাকেশ কুমার চার্জ গঠনের আবেদন জানিয়েছিলেন। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সিবিআইয়ের আইনজীবির কাছে জানতে চান কোন কোন ধারায় কাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে? তখন রাকেশ কুমার বলেছিলেন, এই মামলায় পাবলিক সারভেন্ট বা সরকারি হিসেবে ইসিএল কর্মী ১২ জন, কোম্পানি ১০টি ও ইনডিভিজুয়াল বা ব্যক্তিগত ভাবে ২৭ জনের নামে অর্থ্যাৎ মোট তিনটি ভাগে বিভিন্ন ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। সেদিনই সেই ধারাগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি ধারাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা । তারা তাদের স্বপক্ষে বক্তব্য রাখার জন্য সময় চাইলে বিচারক আগামী সোমবার ১৮ নভেম্বর তাদেরকে বক্তব্য রাখার দিন নির্দিষ্ট করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর কয়লা পাচার মামলায় প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিল সিবিআই। এখনো পর্যন্ত এই মামলায় সিবিআই আসানসোলের আদালতে তিনটি চার্জশিট ( প্রথম ২০২২ সালের ১৯ জুলাই, দ্বিতীয় ২০২৩ সালের ২০ মে ও তৃতীয় ২০২৪ সালের ৩ জুলাই) জমা দিয়েছে। এই চার্জশিটগুলিতে সিবিআই সবমিলিয়ে ৫০ জনকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখিয়েছে। তার মধ্যে বিনয় মিশ্র এখনো ফেরার । অভিযুক্তদের মধ্যে একজন মারা গেছেন । অর্থাৎ বাকি ৪৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হবে।
Be First to Comment