চিত্তরঞ্জন: সিএলডব্লিউ ( চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়াকর্স) বা চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানায় ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনের ছুটি বাতিল করার বিরোধিতায় মঙ্গলবার সকাল থেকে রেল শহরে আন্দোলন শুরু করে বাংলা পক্ষ।
সকাল এগারোটা থেকে বাংলা পক্ষের সমর্থকদের বিক্ষোভ অবরোধের জেরে অবরুদ্ধ হয় চিত্তরঞ্জন রেল শহরে ঢোকার মেন ৩ নম্বর গেট। এর ফলে আসানসোল-চিত্তরঞ্জন যোগাযোগকারী প্রধান রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যায় অসংখ্য দুচাকা ও চারচাকা গাড়ি। তবে এমার্জেন্সি বা জরুরি কাজে যাওয়া গাড়িগুলিকে যাতায়াত করতে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন ২৩ জানুয়ারি ছুটি বাতিল করে দেয়। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সবমহলেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত ও ঘোষণার বিরোধিতায় রেল আধিকারিককে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানানো হয় । সেই অনুযায়ী সোমবার ৬ জনুয়ারি বাংলা পক্ষের তরফ থেকে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়।

তাতে জানানো হয়, তারা মঙ্গলবার ৭ জানুয়ারি সকাল এগারোটার জেনারেল ম্যানেজার বা জিএমের হাতে এই সংক্রান্ত স্মারকলিপি তুলে দেবেন। সেই মতো এদিন সকাল দশটার পর থেকেই জিএম অফিসের সামনে বাংলা পক্ষের সমর্থকেরা জড়ো হতে শুরু করেন। কিন্তু বাংলা পক্ষের অভিযোগ সেই সময়েই আরপিএফের তরফে তাদেরকে সেখান থেকে বলপূর্বক সরিয়ে দেওয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয় কোনরকম এখানে জমায়েত করা যাবে না ও স্মারকলিপিও দেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি তাদেরকে শহরের বাইরে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরপিএফের এই নির্দেশের পরেই বাংলা পক্ষের সমর্থকেরা ৩ নম্বর গেটের বাইরে এসে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। বাংলা পক্ষের পশ্চিম বর্ধমান জেলার তরফে অক্ষয় বন্দোপাধ্যায় বলেন, বাংলার বীর দেশের স্বাধীনতা যোদ্ধা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছে না। বাঙালি বীরকে পদে পদে অসম্মান করা হচ্ছে ।
তাঁর আরো অভিযোগ, চিত্তরঞ্জন দাসকেও যথাযোগ্য সম্মান কারখানা কর্তৃপক্ষ দেন না। তিনি আরো বলেন, ২৩ জানুয়ারি ছুটি বাতিলের বিরুদ্ধে এবং বাংলার মনীষীদের সম্মান রক্ষার দাবি জানিয়ে তারা একটি স্মারকলিপি জেনারেল ম্যানেজারের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু সেটিও দিতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবি যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের হাত থেকে চিত্তরঞ্জন রেল কর্তৃপক্ষ স্মারকলিপি গ্রহণ করছেন ততক্ষণ তারা অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। প্রায় দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ অবরোধ চলার পর রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষ রাজি হয় বাংলা পক্ষের স্মারক লিপি নিতে।
৩ নম্বর গেট থেকে বাংলা পক্ষের এক প্রতিনিধি দল অক্ষয় বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে অফিসে গিয়ে চিফ পার্সোনাল অফিসারের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন। তাঁদের তরফে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়, যদি তাদের দাবি না মানা হয় তাহলে ২৩ জানুয়ারি আরো বড় আন্দোলন করা হবে এই চিত্তরঞ্জন শহরে।




Be First to Comment