দুর্গাপুর: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অবশেষে দুর্গাপুরে টোল আদায় বন্ধ করল দুর্গাপুর নগর নিগম। অভিযোগ, নগর উন্নয়ন মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়াই শহরের সাতটি টোলে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় চলছিল।
দুর্গাপুরের পণ্যবাহী গাড়িগুলির উপর অতিরিক্ত টোলের বোঝা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করছিল ‘দুর্গাপুর স্মল স্কেল অফ ইন্ডাস্ট্রিস অ্যাসোসিয়েশন’। একাধিকবার নগর নিগমের কাছে লিখিত আর্জি জানিয়েও সমাধান না মেলায় গত বছর নভেম্বর মাসে তারা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। মামলার শুনানির পর আদালত নির্দেশ দেয়, আপাতত এই টোল আদায় বন্ধ রাখতে হবে এবং নগর নিগমকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশ পেতেই দুর্গাপুর নগর নিগম দ্রুত সাতটি টোল অফিসে টোল বন্ধের নোটিস লাগিয়ে দেয়। যদিও টোল কর্মীরা এই নোটিস সম্পর্কে অবগত নন এবং অভিযোগ উঠেছে, নোটিস জারি হওয়ার পরেও কিছু জায়গায় টিকিট ছাড়া টোল আদায় চালু রয়েছে।

বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, “নগর উন্নয়ন মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়া এতদিন এই টোলগুলি কীভাবে চলছিল?” তারা দুর্গাপুর নগর নিগমের বিরুদ্ধে টোল আদায়ের নামে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে। যদিও নগর নিগমের মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় এই অভিযোগ নস্যাৎ করে জানিয়েছেন, “আদালতের নির্দেশ মেনেই আপাতত টোল বন্ধ করা হয়েছে। তবে তিন মাসের মধ্যে রাজ্যের অনুমতি নিয়ে ফের টোল চালু করা হবে।”
দুর্গাপুরের হ্যানিমেন সরণি, কাঞ্জিলাল সরণি, নাসের এভিনিউ, পিসিবিএল রোড, নাচন রোড, বনফুল সরণি ও শ্যামপুর মোড়ে সাতটি টোল চালু ছিল। এখান থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হত, যা শহরের ৪৩টি ওয়ার্ডের নাগরিক পরিষেবার জন্য ব্যয় করা হত। ফলে টোল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থসংকট দেখা দিতে পারে।
মামলাকারীদের দাবি, দুর্গাপুরের এই টোল আদায়ের ফলে বাইরের পণ্যবাহী গাড়িগুলি দুর্গাপুরে ঢুকতে চাইছিল না, যার ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছিল। এই সমস্যার সমাধান চেয়ে নগর নিগমকে বারবার অনুরোধ করা হলেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা আইনের দ্বারস্থ হন। আদালত মামলাকারীদের যুক্তি মেনে নিয়ে অস্থায়ীভাবে টোল আদায় বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে এবং নগর নিগমকে তাদের নথিপত্র আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।




Be First to Comment