অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, চিত্তরঞ্জন : রেল শহর চিত্তরঞ্জন কেজি হাসপাতালের প্যাথলজি রুমের ভেতর থেকে ল্যাব টেকনিশিয়ানের মৃতদেহ উদ্ধার হল। শনিবার সকালে হাসপাতালের ভেতর থেকে এক কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চিত্তরঞ্জনে।
মৃত ল্যাব টেকনিশিয়ানের নাম কৃষ্ণ মুরারি সিং (৫৯)। তাঁর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার কৃষ্ণনগরে। তিনি কেজি হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত হওয়ায় থাকতেন চিত্তরঞ্জনের ১৫ নং স্ট্রিটে ১২/বি রেল আবাসনে।
এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ল্যাব টেকনিশিয়ানের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। কেজি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণ মুরারি সিংয়ের সামনের জুলাই মাসে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণ মুরারি সিংয়ের দু’জন রোগীকে রক্ত দেওয়ার জন্য শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত কেজি হাসপাতালে থাকার কথা ছিল। তারমধ্যে তিনি বিকেল পাঁচটার সময় হাসপাতালের কাজ সেরে রেল আবাসনে ফিরে যান। এরপর রাত আটটা নাগাদ বাড়ির লোকেদের বলেন, এমার্জেন্সিডিউটি আছে। রাতে হাসপাতালে যেতে হবে। এই কথা বলে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাতে বাড়ি থেকে তাকে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। রাতেই বাড়ির লোকজনেরা তার খোঁজ করতে হাসপাতালে আসেন।
তাঁরা দেখেন প্যাথলজি রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। এরপর রাতে আর বাড়ির লোকেরা তার খোঁজ করেননি। শনিবার সকালে বাড়ির লোকেরা কৃষ্ণ মুরারি সিংয়ের এক সহকর্মীকে বিষয়টি জানান। এরপর সকাল ছ’টা নাগাদ তারা হাসপাতালে আবার আসেন। তখনও তারা দেখেন, প্যাথলজি রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ রয়েছে। ডাকাডাকি করা হলেও, ভেতর থেকেকোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
এরপর হাসপাতালের ভেতরের অন্য রুম দিয়ে প্যাথলজি বিভাগের দরজা খুলে তারা ভেতরে ঢুকে দেখেন অচৈতন্য অবস্থায় রুমের মধ্যে মেঝেতে কৃষ্ণ মুরারিবাবু পড়ে আছেন। তাঁরা বুঝতে পারেন, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গেছে, প্যাথলজি রুমের চাবি কৃষ্ণ মুরারি বাবুর কাছেই থাকতো। সেই চাবি খুলেই আবাসন থেকে রাতে তিনি সেখানে ঢোকেন।
বাড়ির সূত্রে জানা গেছে, তার বড় ছেলে ক্যান্সার আক্রান্ত। আরেক ছেলে বাইরে চাকরি করেন। অন্যদিকে সামনেই তার চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, কৃষ্ণ মুরারি সিংয়ের বছর খানেক আগে একইসাথে হার্ট এ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল। তারপর থেকে তিনি অসুস্থ ছিলেন।
পুলিশের অনুমান, শুক্রবার রাতে প্যাথোলজি রুমে আসার পরে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তার রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।



Be First to Comment