Press "Enter" to skip to content

বার্নপুরে ইস্কো কারখানার আবাসনে বেআইনি দখলদার উচ্ছেদে বাধা

অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: বার্নপুর ইস্কো কারখানা বা সেল আইএসপি কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকালে আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্নপুরের নিউটাউন এলাকায় ইস্কোর আবাসনগুলিতে অবৈধ দখল মুক্ত করার কথা আগেই জানিয়েছিল ।

সেই মতো এদিন ইস্কো কারখানা কর্তৃপক্ষ এলাকায় অভিযান চালাতে এলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
কার্যত এদিন বেআইনিভাবে দখল করে থাকা আবাসন দখল মুক্ত করতে গিয়ে ইস্কোর আধিকারিকেরা বাধার মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত আবাসনগুলি দখল মুক্ত না করেই ফিরে যেতে হয় ইস্কো আধিকারিকদের।

যা নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধী দল বিজেপির বাকযুদ্ধ শুরু হয়।

নিউটাউন এলাকার বাসিন্দারা ইস্কো অধিকারিকদের বিক্ষোভ দেখিয়ে দাবি করেন, আগে এই এলাকায় ইস্কোর জমিতে অবৈধ দখল করে যেসব খাটাল রয়েছে, সেইসব খাটাল উচ্ছেদ করতে হবে। তাহলেই তারা নিজেদের ইচ্ছায় ইস্কোর আবাসন দখল মুক্ত করে দেবেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে মিন্টু চট্টোপাধ্যায় ও আনন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, এই খাটাল উচ্ছেদ নিয়ে ইস্কো তথা সেল কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসী ও নাগরিকদের পক্ষ থেকে একাধিকবার ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। কারণ এই খাটাল গুলির কারনে রাস্তায় গরু ও মোষ ঘুরে বেড়ায়। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গোবর পড়ে থাকা। যার ফলে এলাকায় প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে। তাছাড়া এলাকা অপরিচ্ছন্ন থাকায় নানান রোগের প্রার্দুভাব ঘটে। তাই খাটাল উচ্ছেদের জন্য আগে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতোদিন খাটাল উচ্ছেদ না করে আবাসন দখল মুক্ত করতে এসেছে ইস্কো আধিকারিকেরা। এত বার বলার পরেও এইসব খাটাল উচ্ছেদ কেন করছেনা ইস্কো কর্তৃপক্ষ ? কার মদত রয়েছে এর পেছনে ? এইভাবে একাধিক প্রশ্ন তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এলাকার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়ে আসানসোল পুরনিগমের ৭৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় বলেন, ইস্কো কারখানা কর্তৃপক্ষ আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের কথায় কাজ করেন। তাই নাগরিকদের লড়াইয়ে তার উপস্থিতি নেই। তার দেখা মেলে না।

অন্যদিকে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ইস্কো কর্তৃপক্ষ বিজেপির নয় তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাসে পরিণত হয়েছে। তাই ইস্কোর জমিতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় গড়ে উঠলেও তা করা উচ্ছেদ হয়না।
ইস্কোর সিএসআর ফাণ্ডের টাকা খরচ করা হয় যেখানে তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও মন্ত্রীরা সেখানে উপস্থিত থাকেন। সেখানে ডেকে তাদেরকে কাজ করানো হয়। সেখানে অগ্নিমিত্রা পাল বা বিজেপির জন প্রতিনিধিদের ডাকা হয় না।

তিনি আরও বলেন, “আমরা ইস্কো কারখানা কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের কথা ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানিয়েছি। দেখা যাক কি হয়। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব”।

এই প্রসঙ্গে ইস্কো কারখানার জিএম মহেশ বার্নওয়াল ও সিজিএম বিনোদ কুমার বলেন, “আমরা এদিন বেআইনি ভাবে দখল করা আবাসন খালি করতে এসেছিলাম। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা আমাদেরকে বলেছেন, আগে এলাকায় থাকা খাটাল উচ্ছেদ করতে হবে। তবে অন্য কাজ করা যাবে। আমরা গোটা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুর প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলি। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে”।

তবে ইস্কো কারখানার দুই আধিকারিক সরাসরি মানতে চাননি যে এলাকার বাসিন্দারা তাদের কাজে বাধা দিয়েছেন। যদিও এদিন তারা যে আবাসন খালি করতে এসেছিলেন, তা না করেই ফিরে যান, তা মেনে নিয়েছেন।

দুই আধিকারিক এও বলেছেন, এই ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণে হাজার হাজার কোটি টাকা লগ্নি হতে চলেছে। তাতে গোটা এলাকায় সামগ্রিক উন্নয়ন হবে।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *