অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিদায়ী সাংসদ আলুওয়ালিয়া দুর্গাপুরে কোনও উন্নয়ন করেননি। তাই এ বার বিজেপি এই কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেনি, আসানসোল কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে । এই অভিযোগের জবাব দিতেই বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী দিলীপ ঘোষকে পাশে বসিয়ে পাঁচ বছরের উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরলেন এস এস আলুওয়ালিয়া ।
বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ এবং আসানসোল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আহলুওয়ালিয়া বলেন, তিনি কোনও দিন একটি কেন্দ্রে দুইবার দাঁড়াননি । তিনি প্রথমবার বিহারে, দ্বিতীয়বার ঝাড়খন্ড, তৃতীয়বার দার্জিলিং, চতুর্থবার দুর্গাপুর, আর পঞ্চমবার এবার আসানসোল কেন্দ্রে প্রার্থী । অতএব তিনি কাজ না করে পালিয়ে যাননি, বরং তিনি ১০০ শতাংশ কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, প্রত্যেক সাংসদরা তাঁদের তহবিলের টাকায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সুপারিশ পাঠান জেলা শাসকদের কাছে। জেলাশাসকরা জেলা পরিকল্পনা আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে বিডিও,পুরসভার কমিশনার বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয় সাংসদের সুপারিশ করা প্রকল্পের প্রয়োজন আছে কি না। জেলার পরিকল্পনা আধিকারিকের কাছে সম্মতি প্রকাশ করলেই জেলা শাসক কাজের অনুমতি দেন।

তিনি বলেন, প্রত্যেক বছর প্রত্যেক সাংসদ তহবিলে পাঁচ কোটি করে টাকা দেওয়া হয়। পাঁচ বছরের মোট পঁচিশ কোটি টাকা। কিন্তু আমার এই পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির জন্য আইসোলেশন সেন্টার করার জন্য সাংসদ তহবিলের কিছু টাকা প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে চলে যায় ।২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ২৯৪ টি প্রকল্প হয়েছে। সঙ্গে জমা থাকা বর্ধমান দুর্গাপুরের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ শহিদুল হকের ১ কোটি ২৩ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা এবং তৃণমূল সাংসদ মমতাজ সংঘমিতার দু কোটি ৯৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকাও খরচ করেছেন তিনি। প্রান্তিক এলাকায় শ্মশানের চুল্লি, হাই মাস্ট লাইট, সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার জন্য খরচ জুগিয়েছেন। সেইলের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণের অনুমোদন, এলোয় স্টিলের বিলগ্নীকরণ আটকে আধুনিকরণের উদ্যোগ নিয়েছেন। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের দুর্গাপুর থারমাল পাওয়ার স্টেশনের সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে নতুন সুপার ক্রিটিক্যাল পাওয়ার ইউনিট প্রতিস্থাপনের অনুমোদন। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি বেসরকারি হোটেলে সোমবার সকালে পাঁচ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন দিলীপ ঘোষকে পাশে নিয়ে বিদায়ী সাংসদ সুরিন্দর সিং আহলুওয়ালিয়া। পারাজ রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের আধুনিকরণের কাজ করেছেন। কেন্দ্রপূর্ণ সহযোগিতা করলেও রাজ্য সরকারের কাছে সদুত্তর না পাওয়ায় কিছু জমি এখনও অধিগ্রহণ হয়নি। ফলে আজও আটকে মায়াবাজার রেল ওভারব্রিজের কাজ।
উত্তরবঙ্গের জনসভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে আক্রমণ করে সাধারণ মানুষকে বলেন, আপনারা কেন ওদেরকে ভোট দিয়েছেন। একশ দিনের কাজের টাকা তো আমরা দিয়েছি। আমরা শুরু করেছি কর্মশ্রী প্রকল্প। এ বিষয়ে দিলীপ ঘোষের পরিষ্কার বক্তব্য, বিধায়ক সাংসদরা কোন উন্নয়নের কাজ করে না তাদের কাজ বিল পাস করা আইন পাস করা। বিধায়ক সাংসদদের কিছু করে টাকা দেওয়া হয় এলাকায় ছোট ছোট কাজ করার জন্য। সেই কাজও বিডিওদের দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে।
উল্টে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, দিল্লি সরাসরি টাকা দেয় রাজ্য সরকারকে। কেন একশ দিনের কাজের টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে, কয়লার রাজস্ব, বালির রাজস্ব কেন পৌঁছাচ্ছে না সরকারের কাছে। সরকারের কাছে যে টাকা আসার কথা সে টাকা দলের লোকেরা খেয়ে নিচ্ছে। কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে দেওয়া ২ লক্ষ ২৯ হাজার কোটি টাকার হিসাব দেখাতে পারেনি।



Be First to Comment