অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, আসানসোল : ভোটের মুখে বিজেপির দুই নেতা-কর্মীর মধ্যে বিবাদ এবং এক কর্মীর অনশন মেটাতে অনশন মঞ্চে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজির হয়ে গেলেন তৃণমূলের বিধায়ক এবং আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। বিজেপির নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে স্বস্ত্রীক বিজেপি কর্মী অনশনে বসেছেন দিন চারেক হল।
বৃহস্পতিবার সকালে এমনই ছবি দেখা গেল কুলটিতে। মেয়র ওই বিজেপি কর্মীকে ফলের রস খাওয়ান ও অনশন তুলে নেওয়ার আবেদন করেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে কুলটির মতো জায়গায় বিজেপি কর্মীর অনশন মঞ্চে মেয়রের আসা রাজনৈতিক দিক থেকে অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তবে মেয়রের দাবি, “নিছক মানবিকতার কারণে এই আসা। বলেছি তাঁদের সঙ্গে আছি। অনশন তুলে নিতে অনুরোধ করেছি।”
জানা গেছে, ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুলটির শাঁকতোড়িয়ায় গত ২৯ জানুয়ারি এই এলাকার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী পবন কুমার সিং ঋণ নিয়ে নিজের বাড়ি তৈরি করছিলেন । বিজেপি কর্মী পবন কুমার সিংয়ের স্ত্রী সুনীতা দেবীর অভিযোগ, বাড়ি তৈরির জন্য তাঁদের কাছে স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রাক্তন কাউন্সিলার অভিজিৎ আচার্য্য ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। তাঁর স্বামীকে অভিজিৎ আচার্য্য নিজের কার্যালয়ে দেখা করতে বলেন। সেখানে তাঁর স্বামী গেলে তাঁকে মারধর করে। তারপর তাঁকেই পুলিশে অভিযোগ করে গ্রেফতার করায় বলে অভিযোগ।
সুনীতা দেবীর আরও অভিযোগ, এরপর তাঁদের বাড়ি ওই নেতার কথায় ভেঙে দেওয়া হয় । যদিও এই ঘটনা ও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতা অভিজিৎ আচার্য্য।
বর্তমানে পবন কুমার সিং ও তাঁর স্ত্রী গত ১৮ মার্চ থেক মঞ্চ তৈরি করে অনশনে বসেছেন ন্যায় বিচারের দাবিতে। পবন কুমার সিংয়ের অভিযোগ, তাদেরকে অভিজিৎ আচার্য্যর আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হুমকি দিচ্ছে। তিনি ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি বিজেপির উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন।
তবে বিজেপি নেতার দাবি, বিষয়টি বিজেপির উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। তাঁরা কি ব্যবস্থা নেয় দেখে তাঁরা অনশন তুলবেন। কারণ তিনি যেমন বিজেপি কর্মী। আর যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তিনি বিজেপি নেতা! তাই বিষয়টি বিজেপির উচ্চ নেতৃত্ব কী ব্যবস্থা নেয়,তা দেখা পর্যন্ত আগামী ২৩ মার্চ এই অনশন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
তবে যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তিনি বলেন, “পবনকুমারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে । ওঁর করা মামলায় আমি কলকাতার উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছি। আর তৃণমুল কংগ্রেস সেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। ওই দলটা শেষের মুখে। এই সময় ওই দলের ওইরকমই নাটক করতে এসেছিলেন।”
তাঁর দাবি, “এই এলাকার মানুষ জানেন যে, অভিজিৎ আচার্য্য সব জিনিসে রাজনীতি করে না।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই অভিযোগ পাওয়ার পর আমি জেলার দশজন উচ্চ নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করে তাঁদের দিয়ে দুপক্ষের সাথে কথা বলে তদন্ত রিপোর্ট রাজ্য কমিটির কাছে পাঠিয়েছি। আমি নিজেও সেখানে আবার যাচ্ছি।”
Be First to Comment