কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ১৫০তম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান ঘিরে উন্মাদনা প্রাক্তনীদের মধ্যে। এই প্রাক্তনীদেরই একজন আবার উত্তরবঙ্গের অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবগুলির হিমাচলের দুর্গম শৃঙ্গ জয়ের যৌথ অভিযানে দলনেতা নির্বাচিত হয়েছেন। নেতৃত্ব দেবেন জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ১৯৯২ ব্যাচের ভাস্কর দাস। ইতিমধ্যে ২১টি পর্বত শৃঙ্গ অভিযান করেছেন তিনি। এর মধ্যে ১৪টিতে তাঁর নেতৃত্বেই এসেছে সফলতা।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবের ১২ জনের একটি দল হিমাচলের দুর্গম পোলোগংকা শৃঙ্গ জয়ের জন্য অভিযান শুরু করতে চলেছেন৷ ১ জুলাই শিলিগুড়ি থেকে রওনা দেবে দলটি। দিল্লি হয়ে মানালিতে পৌঁছবেন পর্বতারোহীরা। সেখান থেকে দরচা ও লাদাখের সোকার লেক হয়ে বেস ক্যাম্পে পৌঁছবেন তারা। উত্তরবঙ্গ থেকে এ ধরনের যৌথ অভিযান এই প্রথম বলে দাবি। এই অভিযানেই নেতৃত্ব দেবেন জলপাইগুড়ি শহরের সেনপাড়ার বাসিন্দা ভাস্কর দাস।
১৯৯১ সালে জয়ন্তীতে প্রকৃতিপাঠ শিবিরে প্রথম অংশ নিয়ে রোমাঞ্চের জগতে প্রবেশ করেন ভাস্কর। এরপরে মাত্র ১৬ বছর বয়সে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে ২০ দিনের কোর্সের মাধ্যমে মূলত পর্বতারোহণে হাতেখড়ি হয় তাঁর। ১৯৯৫ সালে হিমাচল প্রদেশে চন্দ্র পর্বত ছিল তাঁর প্রথম অভিযান। ওই পর্বতের শীর্ষে ওঠেন তিনি। তার আগে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকে বেসিক কোর্স সেরে ফেলেছিলেন তিনি। পরে অ্যাডভান্স মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করে ওই ইন্সটিটিউটেই ‘অতিথি প্রশিক্ষক’ হিসেবে যোগদান করেন তিনি৷ পড়ুয়া থেকে পর্বতপ্রেমী, এমনকি সামরিক বাহিনী ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর বেশ কয়েকজন কে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন তিনি।

পাঁচটি বিদেশি অভিযাত্রী দলের সঙ্গে ভারতীয় লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবেও কাজ করেছেন ভাস্কর। তাঁর দাবি, এখনও পর্যন্ত হাজার দশেক শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেছেন। জলপাইগুড়ি নেচার অ্যান্ড ট্রেকার্স ক্লাবের এই কো-অর্ডিনেটর ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশনের বর্তমান গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য। ইন্টারন্যাশনাল মাউন্টেনিয়ারিং ও ক্লাইম্বিং ফেডারেশনের ইউথ কাউন্সিলে তিন বছর ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবেও অংশ নিয়েছেন।
শহরের সেনপাড়ার বাড়িতে রয়েছে বাবা, স্ত্রী ও ছেলে। ভাস্কর বলেন, “আমার রক্ত-মজ্জায় পর্বতারোহণ ঢুকে গিয়েছে। এ বারে যে গুরুদায়িত্ব পেলাম তা নিজের সেরাটা দিয়ে পালন করার চেষ্টা করব।”



Be First to Comment