আসানসোল : ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা আসানসোল সাংগঠনিক জেলার ডাকে সোমবার বাংলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন ও আরজি করের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে আসানসোল পুরনিগম মোড়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ হয়। জিটি রোড অবরোধ করে ও টায়ার জ্বালিয়ে এই বিক্ষোভ চলে।
আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, ভারতীয় জনতা পার্টির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার বিপুল সংখ্যায় কর্মী ও সমর্থকরা খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও এদিনের আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তায় বসে নারীদের হত্যা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার কর্মী ও সমর্থকেরা। ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।

এই সময় আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে কথা বলতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পুলিশ রাস্তা অবরোধ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলে, বিধায়কের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতন্ডা হয়। পুলিশ অফিসারের সাথে অগ্নিমিত্রার কথা কাটাকাটিও হয়।
বিজেপি বিধায়ক বলেন, আরজি করের ঘটনা এতটাই নৃশংস যে, তার যা নিন্দা করা হোক না কেন, তা কম। এই ঘটনাটি দেখিয়েছে যে মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পুলিশ মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা ব্যর্থ। তাই গোটা ঘটনার দায় নিয়ে তার অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।
বিধায়ক বলেন, পুলিশ প্রশাসন প্রথম থেকেই এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা তাতে ব্যর্থ হয়েছে । এমনকি খুন হওয়া মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ প্রথমে তাঁর বাবা-মাকে দেখতে দেওয়া হয়নি। তাদেরকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয়। প্রথমে তাঁদের বলা হয়, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এমনকি মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ লুকিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে শ্মশানে। সেখানে আরও তিনটি মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য আগে থেকে ছিল। তা সত্বেও মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ পুলিশ প্রশাসনের তরফে শ্মশানের কর্মীদের সেটি সৎকার করতে বলা হয়। কিন্তু কী এমন তাড়া ছিল? এর জবাব দিতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে।
সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হয়নি। যাতে আরও একবার ময়নাতদন্ত করার সুযোগ থাকতো । এর থেকেই সবকিছু রহস্য বোঝা যাচ্ছে।
বিধায়ক বলেন, ওই যুবতী চিকিৎসকের বাবা-মা এতটাই হতভাগ্য যে তারা তাদের মেয়ের সঙ্গে এমন ঘটনার পর নিজেদের মতো করে মেয়ের শেষকৃত্য করার সুযোগও পাননি। পুলিশ প্রশাসন মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ।
তিনি অফিসারদের কাছে একটিই প্রশ্ন করতে চান যে, তাঁদের বাড়িতেও মেয়েরা থাকে। তাঁরা কি তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নন? এ কারণেই কি সেখানে হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ নষ্ট করার জন্য নির্মাণের নামে হাসপাতালের একটি কক্ষ ভেঙে দেওয়া হয় ?
সিবিআইয়ের তদন্ত সম্পর্কে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “আমরা দেখছি তারা কি তদন্ত করছে। আমরা একটা সময় পর্যন্ত দেখব, তারপর আমরা তাদের কাছ থেকেও জবাব চাইব। কাউকে আমরা ছাড়ব না।”
এদিনের বিজেপির আন্দোলনের জন্য আসানসোল পুরনিগম সংলগ্ন এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল । বিজেপির রাস্তা অবরোধের জন্য জিটি রোডে বেশ কিছুক্ষন গাড়ি চলাচল ব্যহত হয়। পরে বিজেপির অবরোধ উঠে গেলে পুলিশ এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।




Be First to Comment