উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,কুলতলি : সুন্দরবনে ঘটা করে হয়ে গেল বট ও অশ্বথ গাছের বিবাহ।
গাছ অমূল্য সম্পদ।পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এই গাছ। সুন্দরবনকে রক্ষা করে এই ম্যানগ্রোভ গাছ। আর পরিবেশের বন্ধু গাছকে বাঁচিয়ে রাখা যে মানুষের কর্তব্য, তা মানুষ বুঝতে পেরেছে। সুন্দরবন ও কলকাতাকে রক্ষা করে চলেছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল আর তার সঙ্গে বট অশ্বত্থের ছায়া প্রাচীন কাল থেকে মানুষকে ছায়া দিচ্ছে, অভিভাবক হিসাবে পাহাje দিচ্ছে। শনিবার রাতে নদী-নালা বেষ্টিত সুন্দরবনের মানুষ একটি বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল।
সুন্দরবনের কুলতলি বিধানসভার মৈপীঠ উপকূল থানার গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্য গুড়গুড়িয়া গ্রামের জঙ্গল ঘেরি এলাকায় ধুম ধাম করে দেওয়া হল বটও অশ্বত্থ গাছের বিয়ে। দেওয়া হল বিয়ের ভুরিভোজ। বট ও অশ্বত্থ গাছের এই বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ।
গ্রামের প্রবীণরা জানিয়েছেন,কথিত আছে, বট ও অশ্বত্থ গাছের বিয়ে দিলে গ্রামের কল্যান হয়। বট ও অশ্বত্থ গাছের বিয়ের উল্লেখ রয়েছে রামায়ণেও ।এ দিন বিয়ের সমস্ত রীতিনীতি মেনে করা হয়েছিল বিয়ের সমস্ত জোগাড় ।শাঁখা সিঁদুর,বিয়ের শাড়ি ,পাঞ্জাবি ধুতি,বিয়ের টোপর থেকে বাদ ছিল না কিছুই । এক কথায়, সম্পূর্ণ শাস্ত্রমতে মানুষেরবিয়েতে খুঁটিনাটি যা যা লাগে, তার প্রায় সব আয়োজনই করা হয়েছিল ।
পরিপাটি করে সাজানো হয়েছিল বিয়ের ছাদনাতলা । বিয়ে দিতে পুরোহিত এসেছিলেন কুলতলি থেকে। স্থানীয় ভাই ভাই যুবক সংঘের সদস্য সমীর জানার উদ্যোগে ও গ্রাম বাসীদের সহায়তায় এদিন বিয়ের যাবতীয় কর্মকাণ্ড শেষ হয়। এমনকি খাওয়া দাওয়ার পর্ব চলে অনেক রাত পর্যন্ত।
এই বিয়ের অনুষ্ঠানে অন্যতম উদ্যোগী সমীর জানা রবিবার বলেন,মূলত গাছকে বাঁচাতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে, ম্যানগ্রোভ রক্ষা করতে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল।এবছর প্রথম এবং কুলতলি বিধানসভা এলাকায় এই ধরনের বিবাহের আয়োজন আগে হয়নি।এই বিবাহের আয়োজনে হিন্দু মুসলিম উভয় ধর্মের মানুষ মিলিত হয়েছিল। আর এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী থাকতে পেরে খুশি সুন্দরবনের মানুষ।
Be First to Comment