তেমন কোনো অভিযোগ নেই বিরোধীদের, বড় অশান্তি ছাড়াই নির্বিঘ্ন আসানসোলের ভোট

অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, আসানসোল : বড় কোনো গন্ডগোল এবং অশান্তি হয়নি। সোমবার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভায় দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বলতে গেলে নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হল।

প্রধান বিরোধী দুই দলের তরফে এদিন ভোট নিয়ে তেমন কিছু অভিযোগ সন্ধ্যে সাতটা পর্যন্ত করা হয়নি। শাসক তৃণমূলের তরফেও এদিনের ভোট নিয়ে সন্ধ্যে পর্যন্ত তেমন কিছু জানানো হয়নি। তবে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আসানসোল লোকসভায় সন্ধ্যে ছটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭০.৯৩ শতাংশ। কমিশনের নির্দিষ্ট করা সময় ছিল সন্ধ্যে ছটা। জানা গেছে, সন্ধ্যে ছটার পরেও বেশ কিছু বুথে ভোট গ্রহণ চলছে। সেক্ষেত্রে ভোট শতাংশের হার সামান্য কিছু হলেও বাড়তে পারে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যে ছটা পর্যন্ত আসানসোল দক্ষিণে ৬৯ শতাংশ, আসানসোল উত্তরে ৬৭.৭০ শতাংশ, বারাবনিতে ৭০.৯৫ শতাংশ, জামুড়িয়ায় ৭২.১০ শতাংশ, কুলটিতে ৭৩ শতাংশ, পান্ডবেশ্বরে ৭১.৬৬ শতাংশ ও রানিগঞ্জে ৭৩.১১ শতাংশ ভোট পড়েছে।

আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার রানিগঞ্জের নতুন এগারা গ্রামে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বিবেক মণ্ডলসহ কয়েকজন বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির জেলা পরিষদের প্রার্থী দীপ্তরূপ মণ্ডল ও সৌরভ মণ্ডল এই হামলায় আহত হয়।

বিজেপির অভিযোগ, দলের পতাকা এবং ব্যানার রবিবার মধ্যরাতের পর থেকেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ছিঁড়ে দিচ্ছিল। তারা বাধা দিতে গেলেই মারধর করা হয়। পুরো বিষয়টি রাতেই নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি পুলিশকে জানানো হয়।সেই খবর পেয়ে কিছুক্ষনের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিজেপির জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অভীক মন্ডল। তারা ওই দুষ্কৃতিদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূলের তরফে অবশ্য গোটা বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।

অন্য দিকে আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটককে রবিবার রাতে একটি অজানা ফোন থেকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ফোনে বলা হয়েছে, বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না । ঠিক মতো থাকুন। অভিজিৎ ঘটক নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে তিনি সোমবার সকালে জানান । তাঁর দাবি, ওই ফোনটি বিজেপির পক্ষ থেকে করা হয়েছে। যদিও, বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, অসত্য কথা বলা হচ্ছে। তদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে যাবে।

এ দিকে, কুলটির নিয়ামতপুর বাজারে ১০৮ নম্বর বুথের কাছে থাকা বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীদের বেঞ্চ টেবিল বুথ ক্যাম্প সরিয়ে দেয় রাজ্য পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থাকা দুই দলেরই পতাকা খোলা হয়। বিকেলের দিকে কুলটির আরও একটি বুথে গন্ডগোল হয়। জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রের নিমসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৯৯ নম্বর বুথে ভোট কেন্দ্রেবাবার সঙ্গে আসে ছেলে। ছেলে তার বাবার পরিবর্তে ভোট দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। বুথের বাইরে ছেলেকে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজেদের নাম বা অন্য কিছু জানাতে অস্বীকার করে তারা দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়।

এদিকে, ভোট শেষ হওয়ার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী এসএস আলুওয়ালিয়া বলেন, “বড় কোনও ঘটনার খবর পাইনি। ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমরা খবর নিচ্ছি। সবকিছু স্ক্রটিনি করা হচ্ছে। তেমন হলে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানানো হবে।”

বিজেপি জেলা সভাপতি বলেন, ৭৭ টি বুথে দলের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। বিজেপির তরফে সন্ধ্যে পর্যন্ত ১৬৩টি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে করা হয়েছে।