আসানসোল: ইসিএলে এ্যাপ্রেন্টিসের চাকরি পাওয়া যুবকের কাছ থেকে ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়া ইসিএলের কর্মী সন্দীপ সাঁধুর ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হলো। সবমিলিয়ে দুটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৫ বছর করে মোট ১০ বছরের সাজা হয়েছে। ২০১৮ সালের এই মামলায় বুধবার আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এই সাজা ঘোষণা করেন। একইভাবে সাজাপ্রাপ্ত ঐ ইসিএল কর্মীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ায় নির্দেশ দেন বিচারক। সেই জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশ দিয়েছেন।
সিবিআই সুত্রে জানা গেছে, আসানসোল উত্তর থানার অন্তর্গত কাখোঁয়া গ্রামের বাসিন্দা ইসিএলের সদর দপ্তর শাঁকতোড়িয়ার ডেসপ্যাচ বিভাগের কর্মী ছিলেন সাজাপ্রাপ্ত এই সন্দীপ সাঁধু। শুনানির শেষে আগেই সন্দীপ সাধুকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। ।
সিবিআই সুত্রে আরো জানা গেছে, উড়িষ্যার ঝারসুগাডা জেলার ব্রাজরান্স নগরের বাসিন্দা অজয় দাস পানিকার এ্যাপ্রেন্টিস বা শিক্ষানবিশের এ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার বা নিয়োগ পত্র নিয়ে আসানসোলের কুলটির শাঁকতোরিয়াতে ইসিএলের হেড কোয়ার্টার বা সদর দপ্তরে এসেছিলেন । তখন এই সন্দীপ সাধু তাকে বিভিন্ন ভাবে নানা কথা বলে কাজ করে দেওয়ায় জন্য ১ লক্ষ টাকা চায়। কিন্তু ঐ যুবক এই পরিমাণ টাকা দিতে পারবে না বলে জানায়। শেষ পর্যন্ত ৯০ হাজার টাকা রফা হয়। তাকে সে ঐ টাকা দিতে বলে। সন্দীপ তাকে সাফ বলে দেয়, এই টাকা না দিলে কাজ হবে না। এরপর অজয় গোটা বিষয়টি সিবিআইকে জানান। সিবিআই সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ইসিএলের হেড কোয়ার্টারের এইচ আর ডি সুভাষ চন্দ্র গুপ্ত ও তার পিএ মানস ভুঁইয়ার নাম সিবিআই পায় আসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তথ্য প্রমাণ না থাকায় তারা এই মামালা থেকে রেহাই পেয়ে যায়। শুধুমাত্র সন্দীপ সাঁধু দোষী সাব্যস্ত হয়।

জানা গেছে, এই মামলায় মোট ১৩ জন সাক্ষী দেন আসানসোল সিবিআই আদালতে। সিবিআই অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে পিসি আইনের ৭/৮, ১৩(১)(ডি), আর/ডব্লু ১৩/২ ও ভারতীয় দন্ডবিধির ১২০ /বি ধারায় এই মামলা করেছিলো।
সিবিআই আইনজীবী রাকেশ কুমার সিং বলেন, ২০১৮ সালের ৩ মে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন এই ইসিএল কর্মী। তারপর আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে।
সন্দীপ সাঁধু তার আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজের মাধ্যমে আদালতের বিচারকের কাছে দরবার করে বলেছিলেন যে, তিনি ভালোভাবে চলতে পারেন না ও পিঠে সমস্যা আছে। তাই সাজা কম করা হোক। জানা গেছে, এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া দুটি মামলায় সর্বোচ্চ ১৭ বছরের সাজা হতে পারে।
সোমনাথ চট্টরাজ বলেন, এদিন শেষ পর্যন্ত বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী দুটি ধারায় ৫ বছর করে মোট ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
এদিন এই সাজা শোনার পরে তার বিরোধীতায় সন্দীপ সাঁধু উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারেন বলে, তার আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে।




Be First to Comment