উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটালে মহিলা চিকিৎসককে নির্মমভাবে ধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্য তথা দেশ ও বিদেশে যে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়েছে তাঁর প্রভাব পড়েছে জয়নগরেও।
গত ৬ দিনে জয়নগরের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট বড়ো নানা প্রতিবাদ মিছিল, পথ সভা, জমায়েত ইত্যাদি দেখতে পাওয়া গেছে। গত ১৪ আগস্ট রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতোই জয়নগরের দুটি মোড়ে মেয়েদের রাত দখল কর্মসূচী পালিত হয়।এ দিন জয়নগর থানার মোড় এবং মজিলপুর জে. এম. ট্রেনিং স্কুলের মোড়ে, দুটি জায়গাতেই প্রচুর সংখ্যক মেয়েরা জমায়েত হয়। অনুষ্ঠানে সংহতি জানাতে তবে ছেলেদের উপস্থিতিও ছিল।জয়নগর থানার মোড়ে প্রতিবাদী গান, কবিতা, বক্তব্য রাখেন অনেকেই। এবং মজিলপুর জেএম টেনিং স্কুলের মোড়ের মোমবাতি মিছিল মজিলপুরের অনেকটা পথ পরিক্রমা করে। ১৫ আগস্ট বিকেলে জয়নগর মজিলপুরের রাস্তায় নামেন জয়নগরের সংবেদনশীল অধিবাসীরা। শ্লোগান মুখরিত মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সব বয়সের নাগরিকরা। ওইদিন সন্ধ্যায় বহড়ু ক্ষেত্র অঞ্চলের কামার পাড়ায় একটি বড় মিছিল করেন স্থানীয় মহিলারা। পথনাটিকার মাধ্যমে তাঁরা তুলে ধরেন সামগ্রিক পরিস্থিতির ভয়াবহতা।১৭ আগস্ট দুপুরে বহড়ুতে ও সন্ধ্যায় দক্ষিণ বারাশতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের দুটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। দুটি মিছিলেই স্কুলপড়ুয়াদের একটি বড় অংশের জমায়েত ও স্লোগান তুলতে দেখা যায়। ১৮ আগস্ট জয়নগরের রাস্তায় নামেন ক্রীড়া প্রেমীরা।তাঁদের মিছিলে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল বেশি। তাঁরা সমবেত কণ্ঠে বিচারের দাবিতে শ্লোগান তোলেন। ১৯ আগস্ট সোমবার সকালে জয়নগরে ‘অভ্যুদয়’ ও ‘উত্তরণ’ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী রাখীবন্ধনের কর্মসূচী নিয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে তাঁরা নারীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে জোরালো আওয়াজ তোলেন।
এ দিন সন্ধ্যায় ‘হে নূতন’ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সদস্যরা নারীসুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের রাখী বন্ধনে রাখীর বদলে পথচারীদের পরিয়ে দেয় প্রতিবাদের কালো ফিতে। তাঁদের বক্তব্য- “এবারের রাখী তোলা থাক। মেয়েরা আগে সুরক্ষা পাক।” এভাবেই বৃহত্তর জয়নগরে বিভিন্ন স্থানে নির্যাতিতার ন্যায়বিচারের দাবিতে ক্ষোভপ্রকাশ করছেন আম ছাত্র জনতা।

এরই পাশাপাশি গত কয়েকদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ও জয়নগরের পথে নেমে এই নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদ জানায়। আগামীতেও আরও বিভিন্ন প্রতিবাদ আন্দোলন করা হবে বলে জানা গেল বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে।




Be First to Comment