উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: পকসো মামলার সাজা ঘোষণা বারুইপুরে।দীর্ঘ চার বছর পর বারুইপুর থানার একটি পকসো মামলার সাজা ঘোষণা করলো বারুইপুর মহকুমা আদালত।
বারুইপুর মহকুমা আদালতে মঙ্গলবার ২০২১ সালের একটি পকসো মামলার সাজা ঘোষণা করলো অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট বিচারকের স্পেশাল কোর্টের সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। আসামি বাবলু ঢালীকে সারা জীবনের কারাবাস এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি অনাদায়ে আরও এক বছর জেল ঘোষণা করেন।তৎসহ রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে নাবালিকার পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার আদেশ দেন এদিন বিচারক।
২০২১ সালের ৩১ জুলাই বারুইপুর থানায় এক ১৪ বছর বয়সী নাবালিকার মা অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে তিনি জানান, তার পাড়ার এক যুবক বাবলু ঢালী দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়েকে প্রভাবিত করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অবৈধ কার্যকলাপ করছিল। প্রথমদিকে মা বিষয়টি বুঝতে পারেননি, তবে মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন দেখে সন্দেহ হয়। এরপর মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সব ঘটনা খুলে বলে।পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বারুইপুর থানার তদন্তকারী সাব ইন্সপেক্টর অরিজিৎ কর্মকার এই মামলার তদন্ত শুরু করেন। যার কেস নম্বর-১৩০৬ / ২১, এই কেসের যথাযথ তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবক বাবলু ঢালিকে গ্রেফতার করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

দীর্ঘ শুনানির পর, বারুইপুর মহকুমা আদালতের মহামান্য এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট বিচারক মঙ্গলবার রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত বাবলু ঢালীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন।পাশাপাশি, জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে এক বছর অতিরিক্ত কারাদণ্ডের শাস্তি ঘোষণা করেন বিচারক।এছাড়া, রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে নাবালিকার পুনর্বাসন ও নিরাপত্তার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
এই রায় সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। বিচারব্যবস্থার কঠোর সিদ্ধান্ত দেখিয়ে দিল যে, অপরাধের শাস্তি অপরিহার্য এবং অপরাধীরা আইনের হাত থেকে পালাতে পারবে না। একইসঙ্গে, এই রায় সমাজকে সচেতন হওয়ার বার্তাও দিচ্ছে—নাবালকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পিতা-মাতা এবং অভিভাবকদের আরও সতর্ক হতে হবে।




Be First to Comment