Press "Enter" to skip to content

আসানসোল কেন্দ্রে “হার” মেনে “ভুয়ো ভোটার ও প্রক্সি ভোট” প্রসঙ্গ বিজেপি প্রার্থীর মুখে, কটাক্ষ শাসক দলের

অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা : আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবারের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। ভোট গণনার চারদিন পরে আসানসোলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সেই পরাজয়কে মেনে নিয়ে, এর পেছনের কারণ হিসাবে প্রক্সি ভোট ও ভুয়ো ভোটারের প্রসঙ্গ টানলেন বিজেপি প্রার্থী। এর পাশাপাশি লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধান সভায় তিন শতাধিক বুথের দলের এজেন্ট না থাকায়, সেখানে ছাপ্পা ভোট হয়েছে বলে দাবি সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়ার। তা তিনি ভোটের দিন বুঝতে না পরালেও, ভোট গণনার দিন গণনা কেন্দ্রে গিয়ে কিছু তথ্য পেয়ে তা বুঝতে পারেন ।

তিনি বলেন, যেমন ওইসব বুথের প্রায় সব ভোট শাসক দলের পক্ষে যাওয়া, বুথে মাত্র দুদলের এজেন্ট থাকা ও ভোটারদের সইয়ের বদলে থাম্ব ইম্প্রেশন দেওয়া। এইসব নিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাচনের আধিকারিকরা যা উত্তর দিয়েছেন, তা আমার ঠিক মনে হয়নি। দলীয় স্তরে কি ধরনের খামতি থাকার জন্য তিনি বাংলা থেকে পরপর তিনবার নির্বাচিত হয়ে দিল্লি যেতে পারলেন, তা অবশ্য এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে খোলসা করে বলেননি। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি প্রার্থী বলেন, দলের কার্যকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তা বার করার চেষ্টা করবো। বিজেপি প্রার্থীর এইসব দাবি ও অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু। তিনি জবাব দিতে গিয়ে বিজেপি প্রার্থীকে কটাক্ষ করেছেন।

শনিবার দুপুরে আসানসোলের বার্ণপুর রোডের কোর্ট মোড সংলগ্ন বিজেপির পার্টি অফিসে এই সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় , রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, কুলটির বিধায়ক ডা. অজয় ​​পোদ্দার, প্রশান্ত চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।

বিজেপি প্রার্থী বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে ভূমিপুত্র হিসাবে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেয়েছি। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য দলের হাইকমান্ডকে ধন্যবাদ জানাই”। তিনি বলেন, “নির্বাচন ঘোষণা করার আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তাতে আমি আসানসোলের পাশাপাশি বর্ধমান দুর্গাপুর ও বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে প্রায় ১ লক্ষ জাল বা ফেক ভোটার থাকার প্রমাণ দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, এমন অনেক লোক ছিল যাদের নাম একাধিক জায়গায় ভোটার তালিকায় আছে। ভোটার তালিকা থেকে এধরনের জাল ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করি। আমার সেই চিঠি বাংলার সিইওর কাছে পাঠানো হয়। কারণ যাই হোক না, আমার আবেদন মতো তা দেওয়া হয়নি। “

একাধিকবার সর্বদলীয় বৈঠক হয় পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সঙ্গে। তখন ভুয়ো ভোটারের প্রসঙ্গ কেন তোলা হয়নি ? তার উত্তর সরাসরি সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া দেননি।তিনি বলেন, “আমাকে যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, তাদেরকে আমি অবশ্যই ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে যারা দেননি, তাদেরকেও ধন্যবাদ। একইসাথে যিনি এখান থেকে জিতছেন, তাঁকেও আমার অভিনন্দন।”

তিনি বলেন, “আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে বেরিয়ে ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি এখানে বেশ কিছু সমস্যা আছে। তার মধ্যে অন্যতম বন্ধ কারখানা খোলা, পানীয়জল, পরিবেশ দূষণ, কয়লাখনি এলাকার ধস ও পুনর্বাসন। “

তিনি বলেন, “এই সব নিয়ে আমার মাথায় একটা পরিকল্পনা ছিল। সেগুলির ব্লুপ্রিন্টও তৈরি করেছিলাম। এখানকার মানুষের সেবা করার সুযোগ পেলে তিনি এসব বাস্তবায়ন করতাম। এখন তার সুযোগ নেই। তবে যিনি জিতেছেন, তাঁকে এইসব সমস্যার কথা বলব। শুনবেন কিনা, সেটা তাঁর ব্যাপার।”

পাশাপাশি তাঁর দাবি, “ভূমিপুত্র হিসাবে আমার এইসব পরিকল্পনা নিয়ে আমার দলের নেতৃত্ব ও কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে কথা বলব।” তাঁর দাবি, বাংলায় এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। তবে আসানসোলে এমন কিছুই হয়নি। তারজন্য তিনি পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের প্রশংসা করেন। তবে কি আসানসোলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, এ নিয়ে সরাসরি কোনও জবাব দেননি সুরেন্দির সিং অলুওয়ালিয়া।

বিজেপি প্রার্থীর এইসব দাবি ও অভিযোগ নিয়ে কটাক্ষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু বলেন, হেরে গেছেন, তা মেনে নিন। যা বলছেন, তা তো তিনি ঠিক করতে পারতেন। কারণ তিনি তো কেন্দ্রীয় শাসক দলের। তাদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী সবকিছুই ছিল।

তৃণমূল নেতা বলেন, আসল কথা বিজেপির কোন সংগঠন নেই। আর মানুষ তাদেরকে ভোট দেননি।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *