Press "Enter" to skip to content

প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা প্রতারণার দায়ে রানিগঞ্জে গ্রেফতার এক মহিলা

রানিগঞ্জ : প্রতিবেশীকে সাহায্য করতে গিয়ে যে এভাবে বিপাকে পড়তে হবে তা একবারও বুঝতে পারেনি এলাকার সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর পরিবারের মহিলারা।

আর সেই সাহায্য করতে গিয়ে এবার বিপাকে পড়ল রানীগঞ্জের আমড়াসোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝাঁটি ডাঙ্গা অঞ্চলের গ্রামীণ মহিলারা । প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা বিভিন্ন নামে ৩০ জনের মত মহিলার নাম করে প্রতারণা করল তাদেরই প্রতিবেশী মহিলা।

ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গেছে, এলাকার বিভিন্ন মহিলাকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অঞ্জু রায় নামে এক মহিলাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ।‌ পুলিশ জানিয়েছে , ধৃত নাম অঞ্জু রায় বাঁশড়া পঞ্চায়েতের ঝাঁটিডাঙার বাসিন্দা ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , আঞ্জু রায়ের স্বামী দিনমজুরি করেন । অঞ্জু কখনো শরীর খারাপ আবার কখনো অন্য কোনও ঝামেলায় তাকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে বাঁচাতে হবে, এমন কথা বলে প্রায় ৩০ জন মহিলার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী রুপা বাউরি জানান, অঞ্জু কারো কাছে সরাসরি টাকা নেয়নি, প্রত্যেককে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া করিয়ে, নিজে টাকা নিয়ে নিয়েছেন । ‌ রুপা জানান, তাঁকে দুটো ব্যাঙ্ক সহ চারটে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দেড় লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া করিয়েছেন । তার মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে অঞ্জু নিয়ে নিয়েছেন। ব্যাঙ্কের টাকা শোধ করার দায়িত্ব মৌখিক পর্যায়ে অঞ্জুই নিয়েছিলেন ।

তারপর হঠাৎই ২০২৪ সালে রাখি বন্ধন উপলক্ষ্যে অঞ্জু বিহারে তাঁর বাপের বাড়ি চলে যান । এরপর যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে, তাঁদের কার্যালয় থেকে রুপাকে একাধিকবার ফোন করা হয় । অবশ্য বাড়িতে তাগাদা করতে কেউ আসেননি ।

আরেক ভুক্তভোগী সপ্তমী বাগদী জানান, একই কথা বলে তাঁর নামে অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুরের আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়া করিয়ে শোধ করে দেওয়ার শর্তে সব টাকা নিয়ে নিয়েছেন ‌। গত বছরের রাখি বন্ধনের কয়েক মাস পর থেকে অঞ্জুকে না পেয়ে, তাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বারবার ফোন করছে ।

সপ্তমী, রুপারা জানান, তাঁদের মত ৩০ জন একইভাবে অঞ্জুর ফাঁদে পড়ে ঋণ নিয়ে টাকা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন । গত বছর রাখি বন্ধনের কয়েক মাস পর তাঁরা একজোট হয়ে অঞ্জুর বিরুদ্ধে রানীগঞ্জ থানায় প্রতারণার অভিযোগ করেন ।

অঞ্জুর স্বামী রাজীব বরাবর তাদের জানিয়েছিলেন, তার সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক নেই । তিন চারদিন আগে শাশুড়ি মারা যাওয়ায় অঞ্জু বিহার থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসেন । এই খবর পেয়ে তাঁরা পুলিশকে বিষয়টি জানান ।

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ৮ মার্চ অঞ্জুকে গ্রেফতার করে আসানসোল আদালতে পাঠানো হয়েছিল । আদালতের নির্দেশে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ‌। মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হলে তার মাঝেই সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে । যদিও সে বেশ কয়েকজনের নামে ঋণ নিয়ে সেই টাকা নিজেই নিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এখন দেখার কিভাবে সকল মহিলারা এই দুর্ভোগ থেকে নিষ্কৃতি পায়, আর প্রকৃত অপরাধীকে কি শাস্তি দেয় বিচারক।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *