Press "Enter" to skip to content

দীর্ঘ ১৪ বছর পর জয়নগরে নিজের ছেলেকে খুঁজে পেল বিহারের এক দম্পতি

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : দীর্ঘ ১৪ বছর পর নিজের বাবা মাকে খুঁজে পেল বিহারের এক বালক,ফিরে গেল জয়নগর থেকে বিহারে।

এ যেন সিনেমার চিত্রনাট্য।বাড়িতে মায়ের বকুনি খেয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন ১৪ বছর আগে বিহারের এক বালক।এরপর কোনোভাবে সে চলে আসে কলকাতায়। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় লক্ষীকান্তপুর লোকালে উঠে পড়ে কোনো কিছু না ভেবে ওই বালক। তারপর ট্রেনের মধ্যেই দেখা হয় এক সবেদা বিক্রেতার সাথে।আর তার সামনে এসে ওই বালকটি কাঁদতে কাঁদতে ওই সবেদা বিক্রেতাকে জড়িয়ে ধরে। কোন কিছুই বলতেই পারেনা শুধু চোখ থেকে জল পরছে। আর সেই দেখে ওই সবেদা বিক্রেতার মনে কষ্ট হয়।

তারপর সে কোনো কিছু না ভেবে একজন মানুষ হিসাবে তাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।ওই সবেদা বিক্রেতার বাড়ি দক্ষিন ২৪ পরগনার জয়নগর থানার দক্ষিণ বারাসাতের হরিনারায়নপুরে। তারপর তাকে কোলে পিঠে করে আস্তে আস্তে বড় করে তোলে। স্কুলে ভর্তি করে পড়াশোনা শেখায়। নিজের পরিচয় দিয়ে তাকে বড় করে তোলে সে।।আর ঐ বালক জানতো এটাই তাঁর বাবা-মা।কিন্তু এখন বড় হয়ে সে একদিন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁর ছবি পোস্ট করে।আর তা কোন ভাবে বিহারের বাসিন্দা ওই বালকের আসল বাবা-মার চোখে পড়ে যায়।আর তারপর তাঁরা যোগাযোগ করলে জানতে পারে তাদের ১৪ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলে এখন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগর থানা এলাকার দক্ষিণ বারাসাতের এক ব্যক্তির বাড়িতে বড় হচ্ছে।

তারপর তাঁরা ওই সবেদা বিক্রেতার ঠিকানা জোগাড় করে খুঁজে খুঁজে চলে আসে দক্ষিণ বারাসাতের হরিনারায়নপুরের ওই ব্যক্তির বাড়িতে। সেখানে এসে দেখে তাদের ছোট্ট ছেলে এখন অনেক বড় হয়ে গেছে।সে তাঁর বাবা মাকে চিন্তে পারছে না।কারন সে জানে তাঁর আসল বাবা মা সবেদা বিক্রেতার পরিবার।বিহার থেকে আসা তাঁর আসল বাবা মাকে সে কোনো ভাবেই চিনতে পারছিল না।

তারপর ওই বালকের পুরানো ছবি তাঁর সেই মায়ের কোলে বসে থাকা সেই ছবি দেখেই আস্তে আস্তে সে চিনতে পারে তার আসল বাবা-মাকে। এরপর সমস্ত পরিচয় দেওয়ার পর লালন পালন করা সেই বাবা ১৪ বছর পরে বুকফাটা কান্নাকে সঙ্গী করে কুড়িয়ে আনা সেই ছেলেকে ফিরিয়ে দিল তাঁর নিজের বাবা-মার কাছে।

যদিও ওই ছেলে আসল বাবা-মার সাথে চলে যাওয়ার আগে বলে, আমি এদেরকেও ছাড়তে পারবো না ওদেরকেও ছাড়তে পারবো না তাই দুজনের সাথেই সম্পর্ক রাখবো এবং দু’জায়গাতেই যাতায়াত করবো। আর এভাবেই কাটিয়ে দেবো আমার বাকি জীবনটা দুই বাবা-মাকে সঙ্গী করে নিয়ে।

আর ১৪ বছরের পালিত বাবা-মা নিজেদের বুকে পাথর চেপে অশ্রু সজল চোখে তাদের পালিত ছেলেকে বিহারের উদ্দেশে যেতে দিল। আর এই মর্মস্পর্শী ঘটনার সাক্ষী থাকল এলাকার বহু মানুষ।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *