আসানসোল : একটি বহুজাতিক বেসরকারি কোম্পানির মোবাইল টাওয়ার বসানোর নামে একটি আর্থিক প্রতারণা চক্রের হদিশ পেল আসানসোল সাইবার থানার পুলিশ।
আসানসোল সাইবার থানার পুলিশের ১৮ জনের একটি দল উত্তর ২৪ পরগণার দমদম সহ পাঁচটি জায়গায় হানা দিয়ে এই চক্রের মুল পান্ডা সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে দুজন মহিলা আছেন। বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা বিষয়টি জানান ডিসিপি ( হেডকোয়ার্টার) ডাঃ অরবিন্দ কুমার আনন্দ।
এই সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন এডিসিপি ( ডিডি) মীর সইদুল আলি, এসিপি ( সাইবার) বিশ্বজিৎ নস্কর ও আসানসোল সাইবার থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং অন্যান্য আধিকারিকরা।

ডিসিপি ( হেডকোয়ার্টার) ডাঃ অরবিন্দ কুমার আনন্দ বলেন, ২০২৩ সালে ৫ মার্চ আসানসোল উত্তর থানার ধীরেন মাঝি নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তিনি তার অভিযোগে বলেছিলেন, রানা মুখোপাধ্যায় একটি বহুজাতিক বেসরকারি কোম্পানির মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য তাকে একাধিকবার ফোন করে। তারজন্যে তাকে ভাড়া এবং একজনের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পরে টাওয়ার বসানোর নামে তার কাছ থেকে ২৪ লক্ষ টাকারও বেশি নেওয়া হয়। এই টাকা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয় বলে ওই ব্যক্তি তার অভিযোগে জানান।
কিন্তু পরে এই ব্যাপারে কোনও কিছু আর হয়নি। এরপর তিনি টাকা ফেরত চান। এরপর থেকেই রানা মুখোপাধ্যায় নামে ওই ব্যক্তি তার সঙ্গে যোগাযোগ করা ছেড়ে দেন। তখনই ধীরেণবাবু বুঝতে পারেন যে, তিনি টাওয়ার বসানোর নামে আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ডিসিপি ( হেডকোয়ার্টার) আরো বলেন, এরপরে ওই ব্যক্তি আসানসোল উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভারতীয় দন্ডবিধির ৪২০ সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরবর্তী সময়ে সাইবার থানার পুলিশ এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায়। এরপর সাইবার থানার পুলিশ নতুন করে তদন্তে নামে। বিভিন্ন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উত্তর ২৪ পরগনার শ্যাম নগর, মধ্যমগ্রাম বাগুইআটি ও দমদম সহ পাঁচটি জায়গায় একযোগে অভিযান চালায়।
সেইসব জায়গা থেকে মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তার মধ্যে দুজন মহিলা আছেন। তাদের কাছ থেকে ২০ টি মোবাইল ফোন, ২ টি ল্যাপটপ, একটি ডায়েরি ও প্রচুর জাল ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে । তিনি আরো বলেন, ধৃতরা কখনো মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার বসানো নামে, আবার কখনো ফাইন্যান্স কোম্পানির নামে ফোন করে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত।
তল্লাশিতে তাদের কাছ থেকে পাওয়া ২২টি মোবাইল ফোন ও দুটি ল্যাপটপ ছাড়া আরও অনেক নথি উদ্ধার করা হয়েছে যা ব্যবহার করে এরা সাধারণ মানুষদেরকে বোকা বানিয়েছে। এরা সিরিয়াল মোবাইল নম্বর ধরে ফোন করতো বলে জানান তিনি।
এদিনই ধৃতদেরকে আসানসোল আদালতে পেশ করে আরো তদন্তে জেরা করার জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। ধৃত ১০ জনের মধ্যে একজন হুগলির এবং বাকিরা সবাই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা। এই চক্রের মুল পান্ডার নাম সন্দীপ কুমার। তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এরই নির্দেশ মত বাকিরা কাজ করত।




Be First to Comment