অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: দুর্গাপুরে সগড়ভাঙ্গায় বেসরকারি গ্রাফাইট কারখানায় কয়েদিন আগে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা কোটা ভাগ করে ১০ জন শ্রমিক নিয়োগ করেছেন। স্থানীয়দের বঞ্চিত করে বহিরাগতদের কাজ দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে কারখানার সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির নেতারা ।
গেট ঠেলে কারখানার ভেতর ঢুকতে গেলে শুরু হয় ব্যপক উত্তেজনা। বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে কোকওভেন থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।
উল্লেখ্য, এই গ্রাফাইট কারখানাকে ঘিরে ২৮ নম্বর এবং ২৯ নম্বর ওয়ার্ড বেশ কয়েক বছর ধরে রাজনীতি চলে আসছে । এই কারখানায় চাকরি দেওয়ার নাম করে বহু বেকার যুবকদের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে রেখেছে নেতারা, এমন অভিযোগ সগড়ভাঙ্গায় কান পাতলেই শোনা যায় ।
২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন দায়িত্বে থাকা এক তৃণমূল নেতা বলেন, ২৮ এবং ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১০টি তৃণমূল পার্টি অফিস কেন ? এখানে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে সবাই শ্রমিক নিয়োগের কোটা চান, সেই কোটা অনুযায়ী ১০ জন ভাগ করে গ্রাফাইট শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে । বঞ্চিত স্থানীয় তৃণমূল কর্মী -সমর্থকদের বক্তব্য, এইভাবে ১০টি -১২টি করে মোট ১৫০ জন শ্রমিক নিয়োগের প্ল্যান করেছেন নেতারা । এটা জানাজানি হতেই বিজেপির নেতারা কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রতিবাদে নেমে পড়লেন ।
বহিরাগতদের কাজে নিয়োগের প্রতিবাদে এবং স্থানীয়দের নিয়োগের দাবিতে সোমবার বিকেলে সগড়ভাঙা কলোনি মাঝের মোড় থেকে কয়েক হাজার লোক নিয়ে গ্রাফাইট কারখানা গেট পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি। মিছিলে নেতৃত্ব দেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিজিৎ দত্ত প্রমুখ। কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী -সমর্থক এই বিক্ষোভে যোগ দেন।
অভিযোগ, এই গ্রাফাইট কারখানাটি দুর্গাপুর পশ্চিমে অবস্থিত। অথচ দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ককে এই নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে অন্ধকারে রেখে তৃণমূল গোপনে লোক নিয়োগ করছে ।বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই অভিযোগ তোলেন, তৃণমূলের সঙ্গে গোপন আঁতাত করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। টাকার বিনিময়ে বহিরাগতদের কাজ দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বেকার যুবকরা কাজের দাবি করলে তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের আধার ও ভোটার কার্ড দেখলেই সরাসরি কাজ নেই বলা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় বেকার যুবকদের যাদের সত্যি কাজের প্রয়োজন আছে, তাদের কাজ দেওয়া না হচ্ছে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।জেলার বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর ব্যানার্জি বলেন, তিনি এখানে বোরো চেয়ারম্যান ছিলেন । তখন থেকেই দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে অত্যন্ত সন্মান করতেন। কিন্তু তিনি এই গ্রাফাইট কারখানা নিয়ে হাতে কালি লাগিয়ে ফেললেন ।
তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, রাতের অন্ধকারে বেআইনিভাবে লোক নিয়োগ করা হলে আমরা ছেড়ে কথা বলবো না । বাইরে থেকে মোটা টাকা নিয়ে নেতারা লোক নিয়োগ করছে, তা বন্ধ না হলেই বৃহতর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি গ্রাফাইট কারখানার গেটে দাঁড়িয়ে এক সংখ্যালঘু নেতাকে হুমকি দিয়ে বলেন, “তাঁর হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে উনি এই কারখানার ডি-ফ্যাক্টো এমডি । তাঁকে আমরা ছাড়ব না”, বলেন চন্দ্রশেখরবাবু ।
Be First to Comment