Press "Enter" to skip to content

‘দীর্ঘ ১০ বছরে এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি তবে বাকি থাকা কাজ শেষ করতে চাই তৃতীয়বার সাংসদ হয়ে’, জানালেন প্রতিমা মণ্ডল

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : ১ জুন শনিবার ১৮ তম লোকসভার শেষ দফার ভোট। জয়নগর আসনেও ভোট এদিন।এই আসনে গত দশ বছরের সাংসদ তৃনমূল কংগ্রেসের প্রতিমা মণ্ডল।ছোট থেকে রাজনীতির অঙ্গনে মানুষ হয়েছেন প্রতিমা।প্রশাসনিক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ২০১৪ সালে জয়নগর আসনে তৃনমূল কংগ্রেসের সৈনিক হিসেবে নেমে পড়েন। এবং প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়ে দীর্ঘদিনের বামেদের দখলে থাকা জয়নগর আসনে জোড়াফুল ফোটাতে সক্ষম হন তিনি।

প্রতিমার বাবা গোবিন্দ চন্দ্র নস্কর দীর্ঘদিন দিন কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন।মন্ত্রীও ছিলেন।পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বনগাঁ আসন থেকে জিতে সাংসদ হন ও পরে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী ও হন। আর ছোটবেলা থেকে রাজনৈতিক পরিবেশে মানুষ হওয়ার কারণে প্রতিমা রাজনৈতিক পাঠটা ভাল পেয়েছেন বাবার কাছে থেকে।মানুষের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার ও সদা হাস্যময় তাঁর কাছে প্লাস পয়েন্ট ভোটের ময়দানে।

দীর্ঘ দশ বছর তিনি সাংসদ আছেন।লোকসভার জিরো আওয়ারে সুন্দরবনের সমস্যা তুলে ধরেন নিয়মিত।যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের বহু মন্ত্রী,কর্মীরা দূর্নীতির অভিযোগে জেলে, সেখানে প্রতিমার নামে গত দশ বছরে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারিনি কোনো বিরোধীরা।আর সেই পুঁজিকে সম্বলকে করে তৃতীয় বার সাংসদ হবার দৌড়ে প্রতিদিন সকালে কলকাতার বাড়ি থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভোটের প্রচার করে বেড়াচ্ছেন তিনি।জয়নগর লোকসভার একটা বড় অংশ সুন্দরবন জুড়ে। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ২৫ কোটি ও তাঁর আগের এস ইউ সি আই সাংসদ ডা: তরুণ মণ্ডলের কাজ না করা তিন কোটি টাকা মোট ২৮ কোটি পেয়েছিল প্রতিমা।করোনার কারণে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ১৭ কোটি টাকা পেয়েছিল।পুরো টাকাটাই এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নে কাজ করেছে।

এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন বিষয়ে প্রতিমা মণ্ডল একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার সাংসদ তহবিলের পুরো টাকা খরচের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে তাদের কর্পোরেট সোস্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সি এস আর)খাতে স্কুল, হাসপাতাল ও এলাকা উন্নয়নে টাকা খরচ করেছি। গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলতে গোসাবা গ্রামীণ হাসপাতালে আমি প্রথম ধাপে মা ও শিশু চিকিৎসার হাব তৈরি করতে ১ কোটি টাকা দিয়েছিলাম।কারন,এই দীপাঞ্চলের বহু প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই প্রসব হয়ে যাবার ঘটনা ঘটতো।যথাযথ প্রসব এবং মা নবজাতকের চিকিৎসার জন্য এই বিভাগ গোসাবা গ্রামীন হাসপাতালে চালু করা হয়।গোসাবার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হ্যামিলটন বাংলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এক কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম কিন্তু ওই বাংলাটি একটি স্বশাসিত ট্রাস্ট পরিচালনা করে বলে টাকা দেওয়া যায়নি।এখন এই পর্যটন কেন্দ্রের চারিদিকে সৌন্দর্যায়ন এবং বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য টাকা দিয়েছি। জয়নগরে একাধিক মন্দিরের চুরির ঘটনার পরে ওই এলাকার নজরদারির জন্য সিসিটিভি বসাতে ১ কোটি টাকা দিয়েছিলাম এবং সেই টাকায় জয়নগর থানায় এলাকায় সিসিটিভি বসানো হয়েছে এবং যার কন্ট্রোল করা হয়েছে জয়নগর থানাতেই।এছাড়া সাংসদ তহবিলের টাকায় ক্যানিং, মগরাহাট এবং কুলতলিতে অসংখ্য সোলার আলো,স্কুল বিল্ডিং এর সংস্কারের কাজ হয়েছে সিএসআর খাতে বিভিন্ন সংস্থার সাহায্য নিয়ে করোনার সময় আমার লোকসভার অন্তর্গত সাতটিবিধানসভার সব হাসপাতালে মাক্স স্যানিটাইজার সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।সাংসদ তহবিলের টাকায় বেশ কয়েকটি সেতু নির্মাণ হয়েছে তবে উল্লেখ যোগ্য ভাবে আমার তহবিলের দেওয়া অর্থে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় জয়নগর ১ নম্বর ব্লকে এটি সেতু নির্মাণ হয়েছে। তাছাড়া ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে সাতটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে।এছাড়া জয়নগর এক নম্বর ব্লকের পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে একটি রাস্তা এবং জয়নগর ২ নম্বর ব্লকের রামকৃষ্ণ গ্রামীণ হাসপাতালে ওপিডি বিল্ডিং করে দেওয়া হয়েছে।আমার সাংসদ তহবিলের টাকায় নির্মিত হয়েছে নাওড়া রামকৃষ্ণ মিশনের বুক ষ্টল এবং লাইব্রেরী বিল্ডিং। কুড়ি লক্ষ টাকায় বাসন্তী সেন্ট টেরেজা স্কুলের সংস্কার। কুলতলিতে কৈখালি জেটি ঘাটের সংস্কার হয়েছে। কুলতলিতে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকায় সৌর বিদ্যুৎ চালিত পানীয় জল বন্টনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোসাবা গ্রামীণ হাসপাতালে ১ কোটি টাকায় রূপ শেড নির্মাণ করা হয়েছে। ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার রোকেয়া বিদ্যালয়ে এক কোটি ১৮ লক্ষ টাকায় নানান উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। জয়নগরে মোয়া হাবের জন্য আমার সাংসদ তহবিলের টাকায় মেসিন কেনা হয়েছে।”

তৃতীয়বারের জন্য সাংসদ হয়ে নদী মাতৃক সুন্দরবন এলাকার এই জয়নগর লোকসভায় বাকি টাকা কাজগুলো শেষ করতে চান প্রতিমা। তিনি বলেন , “আমি চাই সুন্দরবনের পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে, বাড়ি বাড়ি বিদ্যুতের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করে দিতে, রাস্তাঘাটের সংস্কার, পাকা রাস্তা তৈরি করতে।ক্যানিং থেকে ভাঙন খালি হয়ে ঝড়খালি পর্যন্ত নতুন রেলপথের কাজ দ্রুত শেষ করার পদক্ষেপ নেওয়া। জয়নগর এলাকাকে যানজটমুক্ত করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া।সুন্দরবনের নদী বাঁধের সংস্কার।আমি চাই বাকি থাকা কাজ গুলোকে শেষ করতে মা মাটি মানুষের সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তৃতীয় বার সাংসদ হয়ে। আমি চাই সুন্দরবনের উন্নয়নের কাজ তরান্বিত করতে।”

More from UncategorizedMore posts in Uncategorized »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *