আসানসোল : দিনদুপুরে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের ( সিপি) অফিসের অদূরে থেকে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী এক যুবককে অপহরণের অভিযোগ উঠল।
গত ২০ অক্টোবর রবিবার সকালে এই ঘটনাটি ঘটে আসানসোল দক্ষিণ থানার কুমারপুরে সিপি অফিসের অদূরে। ব্যবসায়ী নকুল মন্ডলকে ছাড়ার জন্য অপহরণকারীরা তার মা উষাদেবীর কাছ থেকে মুক্তিপন হিসেবে ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল । কিন্তু, উষাদেবীর সঙ্গে মুক্তিপন নিয়ে রফা না হওয়ায় তিনি আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ তাদের ডেরায় পৌঁছে যাবে, এই আশঙ্কায় পরের দিন সোমবার ভোররাতে কুলটি ও সালানপুর থানার ১৯ নং জাতীয় সড়কে ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। পরে তাঁকে পুলিশ উদ্ধার করে।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সহ বিভিন্ন সোর্স কাজে লাগিয়ে এই ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে বাংলা ঝাড়খণ্ড আন্তঃরাজ্য কিডন্যাপিং গ্যাংয়ের ৫ জনকে গ্রেফতার করে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ।
বুধবার দুপুরে আসানসোল দক্ষিণ থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা ঘটনাটি নিয়ে তথ্য দেন ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস। তিনি বলেন, ধৃত ৫ জনের নাম হল মহঃ পারভেজ, মহঃ সিরাজ, মেহেতাব আলম, সৌরভ কুমার ও মহঃ মেহতাব আলম। ৫ জনের মধ্যে তিনজন আসানসোল উত্তর থানা, একজন আসানসোল দক্ষিণ থানা ও একজন কুলটি থানার নিয়ামতপুর এলাকার বাসিন্দা। এই ঘটনায় ব্যবহার হওয়া একটি চারচাকা গাড়ি ও দুটি মোটরবাইক পুলিশ আটক করেছে।
বুধবারই ধৃত ৫ জনকে আসানসোল আদালতে পেশ করে বিচারকের কাছে টিআই প্যারেডের আবেদন করা হয় । তারপর তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়, এদিন ডিসিপি (সেন্ট্রাল) এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এই অপহরণের ছক ঝাড়খণ্ডে করা হয়েছিল বলে আমরা এখনো পর্যন্ত ধৃতদেরকে জেরা করে জানতে পেরেছি। তাই পুলিশ মনে করছে, এর পেছনে ঝাড়খণ্ডের কোনও অপহরণ চক্র রয়েছে। তাদের খোঁজে মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের একাধিক জায়গায় পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায় নি। আমরা আশা করছি দ্রুত এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত আছে, তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, আসানসোলের জিটি রোডের কুমারপুরে পুলিশ কমিশনারের অফিসের অদূরে সারদাপল্লীতে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন ঝাড়খণ্ডের দেওঘর জেলার আসনবনি থানার চিত্রা এলাকার বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী নকুল মণ্ডল। তার সঙ্গে ছিলেন এক আত্মীয় ও এক বন্ধু। সেখান থেকেই রবিবার সকাল দশটা নাগাদ তাকে অপহরণ করে নিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতিরা।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আসানসোলের সিআই হাবুল আচার্য, আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু, আসানসোল উত্তর থানার ওসি অমিত হালদার, আসানসোল দক্ষিণ পিপির ইনচার্জ সঞ্জীব দে সহ অন্য পুলিশ অফিসাররা।
Be First to Comment