কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে পারে, এমন ইঙ্গিত মিলেছে দলের অন্দরমহল থেকে। সূত্রের খবর, বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পরিবর্তে দল দুই শীর্ষস্থানীয় মহিলা নেত্রীর নাম বিবেচনায় রেখেছে। প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এই দৌড়ে সামনের সারিতে রয়েছেন। দুজনেই দলীয় রাজনীতিতে দৃঢ় অবস্থান ধরে রেখেছেন। পাশাপাশি বিতর্ক এড়িয়ে চলার কৌশলও রপ্ত করেছেন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এই দুই নেত্রীর প্রতিই তাঁর সমর্থন রয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিজেপির অন্দরমহলে খবর, লকেট চট্টোপাধ্যায় ও অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেন শুভেন্দু। নিজে কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীকে সমর্থন না করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হলেও, লকেট ও অগ্নিমিত্রা— উভয়েই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ মুখ। ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর অগ্নিমিত্রা পাল ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সায়নী ঘোষকে পরাজিত করে নজর কাড়েন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তিনি বিভিন্ন আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে অগ্নিমিত্রাকে যখন মেদিনীপুর থেকে লোকসভা ভোটে লড়ার জন্য বলা হয়েছিল, বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ তাকে ‘শুভেন্দু অধিকারীর প্রার্থী’ বলে উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, লকেট চট্টোপাধ্যায় ২০১৫ সালে বিজেপিতে যোগ দেন এবং ক্রমশ দলীয় রাজনীতিতে উত্থান ঘটান। তিনি ২০১৭ সালে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের জায়গায় বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতি হন এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি থেকে জয়ী হন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তাঁর পরিবার পুরোহিত সম্প্রদায়ের হওয়ায় এবং হিন্দুত্ববাদী আদর্শের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেওয়ায় তিনি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মতাদর্শগতভাবে ঘনিষ্ঠ।
তবে লকেট ও অগ্নিমিত্রার পাশাপাশি আরও এক শক্তিশালী নাম উঠে এসেছে— অমিতাভ চক্রবর্তী। তিনি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) এবং সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ। শান্ত ও সংগঠিত কাজের জন্য পরিচিত তিনি। দলীয় রাজনীতিতে স্বল্পপ্রচারিত হলেও, তাঁর আরএসএস-ঘনিষ্ঠতা এবং সংগঠনের প্রতি আনুগত্য তাঁকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতির পদে কে বসবেন, তা এখনও অনিশ্চিত। সুকান্ত মজুমদারের আকস্মিক নিয়োগের মতোই এবারও বিজেপির সিদ্ধান্ত চমকপ্রদ হতে পারে। সুকান্ত নিজেও তাঁর নিয়োগের খবর প্রথম জানতে পারেন বিজেপির শীর্ষ নেতা বি এল সন্তোষের ফোন থেকে, পরে টেলিভিশনে খবর দেখে নিশ্চিত হন। মোদী-শাহ নেতৃত্বাধীন বিজেপির সিদ্ধান্ত গ্রহণের ধরন অনুযায়ী, চূড়ান্ত ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।




Be First to Comment