Press "Enter" to skip to content

স্বামী স্মরণানন্দের প্রয়াণের পর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে?

অমল মাজি (এক্সিকিউটিভ এডিটর, অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস): রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দের প্রয়াণের পর এ বার নতুন অধ্যক্ষ (প্রেসিডেন্ট) নির্বাচিত হবেন। জানা গিয়েছে, স্বামী স্মরণানন্দের স্মরণে আয়োজিত বিশেষ ভাণ্ডারার পরই নতুন অধ্যক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

গত ২৬ মার্চ প্রয়াত হন স্বামী স্মরণানন্দ। শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েন ভক্তরা। সময়ের সঙ্গে সেই পরিস্থিতির বদল হওয়ার পর নতুন অধ্যক্ষ কে নির্বাচিত হবেন, তা নিয়েই চলছে জল্পনা। অধ্যক্ষ ঠিক করে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অছি পরিষদ। আগামী ৭ এপ্রিল স্বামী স্মরণানন্দের স্মরণে বিশেষ ভাণ্ডারার আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের পর থেকে এক মাসের মধ্যেই অছি পরিষদ পরবর্তী অধ্যক্ষ ঠিক করে ফেলবে বলে জানা গিয়েছে।

আলোচনায় যাঁদের নাম

সচরাসচর মঠের বর্তমান সহ-অধ্যক্ষদের মধ্যে থেকেই অধ্যক্ষ নির্বাচন হয়। নিয়ম মেনে এই নির্বাচনে রীতিমতো ভোট দিয়ে থাকেন সঙ্ঘের সাধু-সন্ন্যাসীরা। পদের জন্য মনোনীত মহারাজদের মধ্যে থেকেই কোনো এক জন নির্বাচিত হন। এ বারে নতুন অধ্য়ক্ষ হওয়ার জন্য তিন জনের নাম নিয়ে জল্পনা চলছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন স্বামী গৌতমানন্দ, স্বামী সুহিতানন্দ এবং স্বামী গিরিশানন্দ। তিন জনেই এখনও সহ-অধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। তবে এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চর্চা চলছে স্বামী গৌতমানন্দের নাম নিয়ে।

কে এই স্বামী গৌতমানন্দ

শুক্রবার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্তর্বর্তীকালীন অধ্যক্ষ হিসাবে নির্বাচন করা হয় স্বামী গৌতমানন্দকে। অছি পরিষদের বৈঠকে প্রবীনতম অছি হিসাবে স্বামী গৌতমানন্দের নাম চূড়ান্ত করা হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, সপ্তদশ অধ্যক্ষ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে দীর্ঘদিন চেন্নাই মঠের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি স্বামী গৌতমানন্দ।

স্বামী গৌতমানন্দ ১৯৫১ সালে রামকৃষ্ণ ভাবান্দোলনে যোগদান করেন এবং স্বামী রঙ্গনাথানন্দজির অধীনে প্রাথমিক আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে মঠের দশম অধ্যক্ষ স্বামী বীরেশ্বরানন্দজি কর্তৃক সন্ন্যাসী হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।

উল্লেখযোগ্য ভাবে, ২০ বছর ধরে অরুণাচলপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের আদিবাসী এবং গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষার প্রচারে কাজ করেছেন স্বামী গৌতমানন্দ। তিনি নয়াদিল্লির সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের সাধারণ ও কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এগুলি ভারত সরকারের দুটি প্রধান জাতীয় সংস্থা।

রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মুম্বই, কলকাতা, রায়পুর এবং নারায়ণপুর কেন্দ্রেও কাজ করেছেন স্বামী গৌতমানন্দ। তিনি ১৯৯০ সালে রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের একজন ট্রাস্টি নিযুক্ত হন। ১৯৯৫ সালে তিনি চেন্নাইয়ের রামকৃষ্ণ মঠের প্রধান (অধ্যক্ষ) হিসাবে দায়িত্ব নেন।

মঠের এক প্রবীণ সন্ন্যাসীর কাছ থেকে জানা গেল, স্বামী গৌতমানন্দের জন্ম তামিলনাড়ুতে। ফলে তাঁর মাতৃভাষা তামিল। কিন্তু হিন্দি ও ইংরাজির পাশাপাশি বাংলা-সহ আরও কিছু আঞ্চলিক ভাষাতেও সাবলীল তিনি। এক দিকে যেমন তিনি সুবক্তা হিসাবে পরিচিত, অন্য দিকে ভক্তদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তাও যথেষ্ট। এখন দেখার, মাসখানেকের মধ্যে নতুন অধ্যক্ষ কে নির্বাচিত হন!

More from রাজ্যMore posts in রাজ্য »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *