Press "Enter" to skip to content

আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়

অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস: কলকাতার শিয়ালদহ আদালত আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে শনিবার। ৩৩ বছর বয়সি এই প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ারকে আগামী সোমবার সাজা ঘোষণা করা হবে, যা গত বছরের চাঞ্চল্যকর ঘটনাটির বিচার প্রক্রিয়ার ইতি টানবে।

৩১ বছর বয়সি ওই চিকিৎসক ৮ আগস্ট রাতে কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন। পরদিন সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়, যা গোটা বাংলাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ব্যাপক তদন্ত ও প্রতিবাদের জেরে রাজ্যজুড়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়। দিল্লির ২০১২ সালের নির্ভয়া মামলার অনুকরণে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম তাঁকে ‘অভয়া’ নামে উল্লেখ করেছিল।

শিয়ালদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত আজ ১৬০ পৃষ্ঠার রায়ে সঞ্জয়কে ধর্ষণ, খুন এবং হত্যার দায়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে। রায় ঘোষণার সময় বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন, “আমি পুলিশের ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কিছু কার্যকলাপের সমালোচনা করেছি, যা প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে। বিভাগের প্রধান, এমএসভিপি এবং অধ্যক্ষের ভূমিকা বিভ্রান্তিকর ছিল এবং তা সমালোচিত হয়েছে।”

রায় ঘোষণার পর আদালত কক্ষে ভেঙে পড়েন নিহত চিকিৎসকের বাবা। তিনি বিচারকের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনার ওপর যে বিশ্বাস রেখেছিলাম, তা আপনি সম্মানিত করেছেন।”

শনিবার দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয় সঞ্জয়কে। সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে এবং চিৎকার করে বলে, “একজন আইপিএস অফিসার সব জানেন।” যদিও তার আইনজীবীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। আদালত জানিয়েছে, আগামী সোমবার শাস্তি নির্ধারণের শুনানি হবে।

সঞ্জয়ের এই নির্দোষ দাবি তার প্রাথমিক স্বীকারোক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে তদন্তভার গ্রহণের পর সিবিআইও তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।

নিহত চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশ সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের হাতে মামলা তুলে দেয় লালবাজার। বিচারপ্রক্রিয়া গোপন রাখা হয় এবং ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

ঘটনার পর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর হয়। এই সময় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ওঠে। এ কারণে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও সংশ্লিষ্ট থানার প্রাক্তন আধিকারিক অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে সিবিআই ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট না দেওয়ায় তাঁরা “ডিফল্ট জামিন” পান।

এখনও পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। সেটি প্রকাশিত হলে প্রমাণ লোপাট সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

More from রাজ্যMore posts in রাজ্য »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *